‘অসহিষ্ণু’ বস

তিন দিনেই চাকরি ছাড়তে বাধ্য হলেন তরুণী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:১৭ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২৩
প্রতীকী ছবি

নতুন কাজে যোগ দেওয়া সবসময়ই রোমাঞ্চকর। তবে তা কখনো কখনো অতিরিক্ত চাপের হয়ে উঠতে পারে। নতুন নতুন লোকের সঙ্গে দেখা করা, নতুন ভূমিকা নেওয়া, দায়িত্ব সামলানো এবং একটি নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা শুরুতে চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। এ ধরনের চিন্তাভাবনা স্বাভাবিক। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অসহিষ্ণু, সহযোগিতাবিমুখ এবং অসংবেদনশীল হলে কর্মীদের জন্য কর্মক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে বিষাক্ত। যার ফলে অনেক সময় সেখানে কাজ করাই হয়ে ওঠে কঠিন।

সম্প্রতি এ ধরনেরই তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে এক তরুণীর। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, যোগদানের মাত্র তিন দিনের মাথায় কেন তাকে নতুন চাকরি ছেড়ে দিতে হয়েছিল।

আরও পড়ুন>> এক বছর পর সাবেক কর্মীর দ্বারস্থ হতে হলো বসকে, সাধলেন টাকা

রেডিটের এক পোস্টে ওই তরুণী লিখেছেন, আমি সোমবার একটি কোম্পানিতে কাজ শুরু করি। বুধবার বস আমাকে ডেকে নিম্নোক্ত কথাগুলো বলেন, যার জন্য আমাকে পদত্যাগ করতে হয়। আমার এই কাজটি সঠিক ছিল কি না বা আমি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলাম কি না সে বিষয়ে আপনাদের মতামত আশা করি।

যে কারণে আমাকে বকাঝকা করা হয়েছিল:

> তিনি প্রশ্ন করেন, অনেক কাজ জমা হয়ে গেলেও আমি কেন কিছু করছি না। (তিনি আমাকে কখনোই কোনো কাজ দেননি। কাজ দিয়েছিলেন আমার সহকর্মী ও পরামর্শক, যা আমি করছিলাম।)

> তিনি প্রশ্ন করেন, আমাকে দেওয়া কাজ শেষ করতে কেন বেশি সময় অফিসে থাকলাম না এবং আমি কেন এত ধীর। (আমি তখনো শিখছিলাম এবং আমার সহকর্মী/পরামর্শকই আমাকে অফিস শেষে সন্ধ্যা ৬টায় বাড়ি যেতে বলেছিলেন। এছাড়া, আমাকে কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, তার এটি করার দরকার নেই।)

আরও পড়ুন>> বাড়িভাড়া বাঁচাতে প্লেনে চড়ে অফিসে যাতায়াত!

> তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমার কোনো মানসিক সমস্যা রয়েছে কি না। আমি বলি, তেমন কোনো সমস্যা নেই (এটাই সত্যি)। তারপরে তিনি আমার বিরুদ্ধে টপিক পরিবর্তনের অভিযোগ তোলেন এবং আবারও উত্তর দাবি করেন। তখন তাকে বলি, অনেক আগে আমাকে এন্টিডিপ্রেসেন্টস (অবসাদনিরোধক) ওষুধ প্রেসক্রাইব করা হয়েছিল এবং এক বছরেরও বেশি সময় আগে আমি তা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। তিনি বলেন, ইন্টারভিউয়ের সময় আমার এটি তাকে জানানো উচিত ছিল, যেন তিনি আমাকে নিয়োগ দেবেন কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। (তিনি আমাকে কখনো এ ধরনের প্রশ্ন করেনইনি। তার দাবি, এটি জিজ্ঞেস করার দরকার নেই।)

> তিনি আমাকে বছরের পর বছর অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেন। (আমি ১০ মিনিটের মতো টয়লেটে ছিলাম)। তিনি প্রশ্ন করেন, আমি কেন টয়লেটে এত সময় নিয়েছিলাম? আমি জানাই, কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে। তিনি বলেন, আমার এই সমস্যার কথাও তাকে ইন্টারভিউয়ের সময় জানানো উচিত ছিল।

> আমি তাকে ওপরের সবগুলো বিষয় ব্যাখ্যা করার পর তিনি আমাকে তর্ক করার জন্য অভিযুক্ত করেন। তারপর বলেন, আমি সেখানে কাজ করতে পারবো কি না তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিনি আমাকে একদিন সময় দিচ্ছেন। আমি জানাই, আগামীকাল পর্যন্ত দরকার নেই, আমি এই মুহূর্তে পদত্যাগ করছি।

আরও পড়ুন>> ভাড়াটিয়াকে ব্যবসার জন্য ১০ লাখ টাকা দিলেন বাড়িওয়ালা!

jagonews24

এরপর ওই তরুণী লিখেছেন, অবশ্যই ওরকম বিষাক্ত জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে আমি স্বস্তিবোধ করছি। তবে বুঝতে পারছি, এত তাড়াতাড়ি চাকরি ছেড়ে দেওয়া কতটা খারাপ দেখায়। আর আমার বাবা মনে করেন, আমার আরও শক্ত থাকা উচিত ছিল। তাই আপনাদের মতামত চাই- আমি কি ঠিক করেছি নাকি সেখানে থেকে যাওয়া উচিত ছিল?

আরও পড়ুন>> রেস্তোরাঁয় বসে অনলাইনে অর্ডার, খাবার মিললো অর্ধেক দামে!

তার এই পোস্টে দুই হাজারের বেশি ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন। তাদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। তবে বেশিরভাগই ওই তরুণীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

একজন লিখেছেন, প্রশিক্ষণ চলাকালেই নতুন কর্মীর সঙ্গে যদি এই আচরণ করা হয়, তার মানে তিনি আপনার সঙ্গে এমনটি করতেই থাকতেন। আর তিনি আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে এবং সম্ভবত অতিরিক্ত সময় কাজ করতে বাধ্য করতেন। আপনি ঠিক কাজই করেছেন। পরবর্তী চাকরির জন্য শুভকামনা।

সূত্র: এনডিটিভি
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।