সিংহী খুঁজতে হলিউডি কায়দায় অভিযান, মিললো বুনো শুয়োর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:১৮ পিএম, ২৩ জুলাই ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

শান্ত শহরের রাস্তায় হঠাৎ করেই হেঁটে বেড়াচ্ছে একটি সিংহী। অনেকেই আবার সেটিকে নিজের চোখে দেখেছেন। জানতে পেরে হেলিকপ্টার, অসংখ্য পুলিশের গাড়ি, শতাধিক পুলিশ সদস্য নিয়ে হলিউডি কায়দায় তল্লাশি অভিযানে নামে শহর কর্তৃপক্ষ। সবশেষে জানা যায়, শহরে কোনো সিংহী নেই। যে প্রাণীটিকে দেখা গেছে, সেটি মূলত একটি শুয়োর।

গত বুধবার (১৯ জুলাই) এমন খবরে হুলস্থুল কাণ্ড ঘটে যায় জার্মানির ক্লাইনমাঁখো শহরে। অজানা প্রাণীর আতঙ্কে অস্থির হয়ে পড়ে রাজধানী বার্লিনের কেন্দ্রস্থল থেকে মাত্র ১৪ মাইল দূরের শহরটির ২০ হাজার বাসিন্দা।

এক প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা একটি ভিডিওর সূত্র ধরে পুলিশ কর্মকর্তারাসহ সবাই ধরে নেন শহরে আসলেই একটি সিংহী ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতেই ঘাবড়ে যান সবাই। শহরজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাপক জোরদার করার পাশাপাশি বাসিন্দাদের ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেয় পুলিশ।

পরে সিংহীটির খোঁজে ৩০ ঘণ্টা ধরে চলে রুদ্ধশ্বাস অভিযান। তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয় পুরো শহর। শেষমেষ সিংহীটিকে না পেয়ে অভিযান শেষ ঘোষণা করে শহর কর্তৃপক্ষ। পরে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় মেয়র মাইকেল গ্রুবার্ট জানান, ভিডিওতে দেখা অজানা প্রাণীটি আসলে সিংহী নয়, সম্ভবত একটি বুনো শুয়োর ছিল।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীর ভিডিও ফুটেজটি দুজন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞকে দেখানো হয়। তারা এটি বিশ্লেষণ করে বলেছেন, প্রাণীটি আসলে সিংহী নয়। তাছাড়া ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েও শহরে কোনো সিংহ বা বাঘ গোত্রীয় প্রাণীর সন্ধান মেলেনি। জঙ্গলে ঘেরা অঞ্চলগুলোতে কিছু বন্যশুয়োর ছাড়া আর কিছু চোখে পড়েনি।

বার্লিনের বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ রাইনার আল্টেনক্যাম্প জানান, ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা প্রাণীটি একটি বন্য শুয়োর ছিল। ভিডিও ফুটেজে দেখতে পাওয়া প্রাণীটির যেসব শারিরীক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা গেছে সেগুলো বড় আকৃতির বেড়াল গোত্রীয় প্রাণী নয় বরং বন্য শুয়োরের সঙ্গে মেলে।

জানা যায়, বুধবার শহরে সিংহীর উপস্থিতির খবরে পুলিশ, বন্যপ্রাণী শিকারী ও প্রাণী চিকিৎসকদের নিয়ে বিশাল একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। প্রায় ৩০ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে ব্যবহার করা হয় পুলিশের একাধিক হেলিকপ্টার ও অন্তত ১০টি ভিডিও ক্যামেরাযুক্ত ড্রোন।

যে স্থানটিতে অজানা প্রাণীটির প্রথম দেখা মিলেছিল বলে দাবি করা হয়, সে জায়গাটি অন্তত ৭০টি পুলিশের গাড়ি দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। রাতভর পাহারায় নিযুক্ত থাকেন দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য। অভিযানে ঘ্রাণ সনাক্তে অতি দক্ষ কুকুরও ব্যবহার করা হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে তল্লাশি চলাকালে সিংহের গর্জন শুনতে পাওয়ার বিষয়টিও তদন্ত করে পুলিশ। পরে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এটা হয়তো কেউ মজা করে বা উত্তেজনা আরও বাড়াতে করেছে। হয়তো, মজা করার জন্যই ব্লুটুথ ও লাউড স্পিকারে সিংহের গর্জন বাজানো হয়েছে।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।