প্রধান বিরোধীদল ছাড়া জয়ের পথে এশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী
কম্বোডিয়ার জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এই নির্বাচনে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের দল কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) খুব সহজেই জয় পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ এই নির্বাচনে দেশটির প্রধান বিরোধীদল অংশ নিতে পারেনি।
দেশটিতে যে নির্বাচন হয়েছে, তাকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক বলছেন সমালোচকরা।
আরও পড়ুন>যেভাবে ক্ষমতায় এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী
স্থানীয় সময় রোববার (২২ জুলাই) সকাল ৭টার দিকে ভোট শুরু হয়, যা শেষ হয়েছে বিকেল ৩টার দিকে। দেশটির নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, নির্বাচনে ভোট দেওয়ার যোগ্য ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৯৭ লাখ।
ক্ষমতসীন সিপিপির পাশাপশি এই নির্বাচনে আরও ছোট ছোট ১৭টি দল অংশ নিয়েছে। তবে হুন সেনকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কোনো দল এই নির্বাচনে নেই। গত কয়েক দশক ধরেই তিনি দেশটিতে ক্ষমতায় রয়েছেন। এরই মধ্যে পেয়েছেন কর্তৃত্ববাদের তকমা।
কম্বোডিয়ার জাতীয় অ্যাসেম্বিলির ১২৫ আসনেই হুন সেনের দল সহজ জয় পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন>সাধারণ মানুষের সৃজনশীলতা ছাড়িয়ে গেছে চ্যাটজিপিটি: গবেষণা
কম্বোডিয়ায় সিপিপির প্রধান প্রতিপক্ষ ক্যান্ডেললাইট পার্টি। দেশটির একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য এই বিরোধী দল এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। কারণ নিবন্ধনসংক্রান্ত ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে গত মে মাসে এই দলকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
কয়েক বছর আগেই রাজনৈতিক বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করতে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে নির্দয় অভিযান চালিয়েছিলেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। সেসময় বিরোধী দলের জনপ্রিয়তা বাড়ছিল ও তার ক্ষমতা হুমকির মুখে পড়ছিল। এ অবস্থায় আদালতকে ব্যবহার করে বিরোধী দলকে দমনের কৌশল নেন হুন সেন।
বিরোধী দলের নেতাদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করা হয়। গ্রেফতার করা হয় অনেককে। প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করার ছয় মাস পরেই নির্বাচন দেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমানে ৭০ বছর বয়সী হুন সেন ১৯৮৫ সাল থেকে কম্বোডিয়া শাসন করছেন। ৩৮ বছর ধরে ক্ষমতা ধরে রাখা এ নেতা নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দাবি করেন।
মূলত এই দীর্ঘ সময় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করেই কম্বোডিয়ার ক্ষমতা ধরে রেখেছেন হুন সেন। রাজনৈতিক বিরোধীদের কারাগারে পাঠিয়ে, নির্বাসিত করে বা তাদের সাথে আঁতাত করে ক্ষমতার শীর্ষে নিজের অবস্থান অক্ষুণ্ন রেখেছেন তিনি।
সূত্র: আল-জাজিরা
এমএসএম