লুট করা মূল্যবান প্রত্নবস্তু ফেরত দিচ্ছে নেদারল্যান্ডস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:২৬ পিএম, ০৭ জুলাই ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

ঔপনিবেশিক আমলে এশিয়ার দুই দেশে শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়া থেকে লুট করা অসংখ্য মূল্যবান প্রত্নবস্তু ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডস। যে জিনিসগুলো ফেরত দেওয়া হবে তার মধ্যে একটি রত্ন-খচিত ব্রোঞ্জের কামান ও ‘লম্বক কোষাগার’ থেকে লুট করা গহনাও রয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, নেদারল্যান্ডস তার ঔপনিবেশিক অতীতকে ক্রমবর্ধমানভাবে সামনে এনে ভুল স্বীকারের পরপরই এসব সামগ্রী ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি সামনে এলো।

অন্যান্য দেশও সাম্প্রতিক বছরে লুণ্ঠিত মূল্যবান নিদর্শনগুলো ফিরিয়ে দিতে শুরু করেছে। এর মধ্য উল্লেখযোগ্য হলো, ব্রিটিশ ও জার্মান জাদুঘর ১৮৯৭ সালে নাইজেরিয়ায় ব্রিটিশ সামরিক অভিযানকালে লুণ্ঠিত কিছু বেনিন ব্রোঞ্জ হস্তান্তর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

jagonews24

নেদারল্যান্ডসের সংস্কৃতিমন্ত্রী গুনে উসলু বলেছেন, এই প্রথমবার আমরা উপনিবেশকালের বস্তু ফিরিয়ে দিচ্ছি। এমন কিছু কখনোই হওয়া উচিত না। তবে আমরা শুধু বস্তু ফেরত দিচ্ছি না। এটি আসলে ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার অংশ।

ইন্দোনেশিয়ার কাছে ফেরত দেওয়া জিনিসের মধ্যে রয়েছে ‘লম্বক রত্ন’। এর মধ্য রয়েছে মূল্যবান পাথর, স্বর্ণ, রৌপ্য ও নানা রত্ন, যা ১৮৯৪ সালে ইন্দোনেশিয়ার লম্বক দ্বীপের একটি রাজকীয় প্রাসাদ থেকে ডাচ ঔপনিবেশিক সেনাবাহিনী লুট করেছিল।

এদিকে শ্রীলঙ্কা ১৮০০ শতাব্দীর একটি সুসজ্জিত ব্রোঞ্জ কামান ফিরিয়ে নেবে, যা বর্তমানে আমস্টারডামের রিজকস মিউজিয়ামে রয়েছে। এটি প্রদর্শনও করা হয়। এটি ১৭৪০-এর দশকে শ্রীলঙ্কার এক অভিজাত ‘ক্যান্ডির রাজা’কে উপহার দিয়েছিল বলে মনে করা হয়। কামানটি ১৭৬৫ সালে ডাচদের হাতে পড়েছিল বলে মনে করা হয়। এ সময় ডাচ সৈন্যরা শ্রীলঙ্কার রাজ্য ক্যান্ডি আক্রমণ এবং জয় করে।

সংস্কৃতিমন্ত্রী উসলু বলেছেন, সরকার ঔপনিবেশিক যুগে গৃহীত শিল্পের তদন্তকারী একটি ডাচ কমিটির ২০২০ সালের প্রতিবেদনে দেওয়া সুপারিশের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ওই কমিটি প্রতিবেদনে জানায়, কোনো উপনিবেশ দেশ লুণ্ঠিত বস্তুসামগ্রী দাবি করলে সরকারকে বিনা শর্তে তা ফিরিয়ে দিতে ইচ্ছুক হওয়া উচিত। নেদারল্যান্ডসকে অবশ্যই ঔপনিবেশিক যুগের অন্যায়ের দায় নিতে হবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটি তার উত্তরাধিকার নিয়ে আরও খোলামেলাভাবে আলাপ করছে। শনিবার নেদারল্যান্ডসের রাজা উইলেম আলেকজান্ডার আনুষ্ঠানিকভাবে উপনিবেশকালের দাস ব্যবসার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি তাকে পীড়া দিয়েছে।

১৭ শতকের পরে নেদারল্যান্ডস একটি প্রধান ঔপনিবেশিক শক্তিতে পরিণত হয়েছিল। তৎকালীন বিশ্বজুড়ে ডাচ দাস ব্যবসায়ীরা ৬ লাখেরও বেশি মানুষ পাচার করেছিল।

সূত্র: বিবিসি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।