জ্বালানির অভাবে সামরিক অনুশীলন বন্ধ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর
দীর্ঘদিন ধরেই অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সংকটে ভুগছে পাকিস্তান। এবার দেশটির সেনাবাহিনীর জ্বালানিও প্রায় শেষের পথে। আর এ কারণেই চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সবধরনের সামরিক অনুশীলন স্থগিত ঘোষণা করেছে তারা।
সম্প্রতি ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি ট্রেইনিংয়ের কার্যালয় থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর ও সব আঞ্চলিক দপ্তরসহ অন্যান্য ইউনিটের কাছে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বা সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নয়, বরং জ্বালানি সংকটের কারণেই ডিসেম্বর পর্যন্ত সবধরনের যুদ্ধ প্রস্তুতি ও অনুশীলন বাতিল করা হয়েছে।
গত ৯ মে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেশটির অর্থনৈতিক অস্থিরতার আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভ, সেনা স্থাপনায় হামলা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটায়।
আরও পড়ুন: প্রায় ২০০ মামলা, জীবনের ঝুঁকি থাকলেও দেশ ছাড়বেন না ইমরান
বর্তমানে পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতি এতই বেশি যে মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবন নিয়ে সংগ্রাম করছে। ময়দার মতো খাদ্যদ্রব্যের জন্য দাঙ্গা ও মৃত্যু পর্যন্ত ঘটছে। সেই সঙ্গে জ্বালানি, তেল ও লুব্রিকেন্টের পাহাড়সম দাম পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সবচেয়ে বেশি বিপদে ফেলেছে।
পাকিস্তানে পেট্রোল ও ডিজেলের মতো জ্বালানি তেলের দাম বর্তমানে ২৭০-২৮০ রুপিতে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, প্রতি লিটার কেরোসিন তেল ১৬৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে অনেক সামরিক ট্রাক, ছোট যান, ট্যাংক ও পদাতিক যুদ্ধযান রয়েছে। এগুলোর জন্য বছরে প্রচুর পরিমাণ জ্বালানি ও লুব্রিকেন্টের প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুন: ওয়াগনার প্রধান এখন রাশিয়ায়
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পাকিস্তান সেনাবাহিনী সম্পর্কিত বিষয়ে দিল্লির একজন সুপরিচিত বিশেষজ্ঞ দানভীর সিং বলেন, একটি পাকিস্তানি টি-৮০ ট্যাঙ্ক প্রতি কিলোমিটারে দুই লিটার জ্বালানি খরচ করে। বর্তমানে দেশটিতে যে সংকট চলছে, তাতে এ ধরনের যুদ্ধযান ব্যবহার বা সচল রাখা কঠিন। আর এ কারণেই পাকিস্তান সব সাঁজোয়া ও যান্ত্রিক মহড়া স্থগিত করেছে।
এদিকে, পাকিস্তানকে তিনশ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রাথমিক চুক্তি করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। শুক্রবার (৩০ জুন) পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ও আইএমএফের মধ্যে এ চুক্তি হয়।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ায় সাবেক প্রেমিকের হাতে হত্যার শিকার ভারতীয় শিক্ষার্থী
চুক্তির বিষয়টি জানিয়ে এক টুইটার বার্তায় পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার লেখেন, সব প্রশংসা আল্লাহর। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, পাকিস্তান আইএমএফ থেকে শিগগিরই চুক্তির আনুষ্ঠানিক নথি পাবে। এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, আইএমএফের সঙ্গে যেকোনো সময় চূড়ান্ত চুক্তি হতে পারে।
জানা গেছে, আইএমএফ বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে চূড়ান্ত চুক্তির পর, পাকিস্তান নয় মাসে এ ঋণ পেতে পারে।
সূত্র: ইউরেশিয়ান টাইমস
এসএএইচ