সাবমেরিন বিধ্বস্ত

২০১৯ সালে প্লেন দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলেও এবার রক্ষা হলো না

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:২১ পিএম, ২৩ জুন ২০২৩
ছবি সংগৃহীত

ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা থেকে ভাগ্যের জোরে বেঁচে ফিরলেও এবার আর রক্ষা পেলেন না পাকিস্তান-বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ধনকুবের শাহজাদা দাউদ। আটলান্টিকের গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে মারা গেছেন এই ব্যবসায়ী এবং তার ১৯ বছরের ছেলে সুলেমান।

টাইটান নামের একটি সাবমেরিন দুর্ঘটনায় পাইলটসহ যে পাঁচজন নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ছিলেন শাহজাদা দাউদ এবং তার ছেল। শাহজাদার স্ত্রী ক্রিস্টিন এক ব্লগে জানিয়েছিলেন, ২০১৯ সালে এক প্লেন দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন শাহজাদা। টাইটান দুর্ঘটনার পর সেই ব্লগ নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন: সতর্ক করার পরও কেন গভীর সমুদ্রে যাত্রা করেছিল টাইটান?

ওই ব্লগে ক্রিস্টিন জানিয়েছেন, তারা যে বিমানে সপরিবার উঠেছিলেন সেটি মাঝ আকাশ থেকে নিচের দিকে নেমে আসছিল। সে সময় এক ভয়ানক মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছিলেন তিনি এবং তার স্বামী। ক্রিস্টিন আরও জানিয়েছেন, তার স্বামী বহুবার নানা রকম অ্যাডভেঞ্চার অভিযানে গিয়েছেন।

কিন্তু ওই পরিস্থিতিতে রুদ্ধশ্বাস অভিযানে যাওয়া মানুষটিও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। পরে ক্রিস্টিনকে শাহজাদা জানিয়েছিলেন যে, ওই মুহূর্তেও তার আফসোস হচ্ছিল যে, প্লেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে তার অনেক অভিযানই অপূর্ণ থেকে যাবে।

তবে বিমানটি কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছিল তা ওই ব্লগে উল্লেখ করেননি ক্রিস্টিন। তবে তিনি জানিয়েছেন টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া অভিযানের বিষয়টি নিয়ে খুব উৎসাহী ছিলেন শাহজাদা। ছেলে সুলেমানেরও এসব বিষয়ে আগ্রহ থাকায় তাকেও এই অভিযানে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন শাহজাদার বোন আজমে দাউদ। এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ফাদার্স ডে’র উপহার দিতে পুত্র সুলেমানকে এই অভিযানে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন শাহজাদা। কিন্তু সুলেমান এই অভিযানে যেতে ইচ্ছুক ছিলেন না। কিন্তু বাবাকে খুশি করতেই এই অভিযানে যান তিনি।

গভীর সমুদ্রে বিস্ফোরণে ওই সাবমেরিনের সব আরোহী মারা গেছেন। মার্কিন কোস্টগার্ড আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সাবমেরিন টাইটান পরিচালনাকারী সংস্থা ওশেনগেটের পক্ষ থেকেও একই তথ্য জানানো হয়েছে।

নিখোঁজ সাবমেরিন টাইটানের পাঁচটি বড় টুকরা শনাক্ত করা হয়েছে। শনাক্ত টুকরাগুলোর মধ্যে রয়েছে- একটি ‘নোজ কোন’, প্রেসার হুলের বাইরের অংশবিশেষ ও বড় একটি ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্র। যেখানে টাইটানিক জাহাজ ধ্বংস হয়েছিল, তার ঠিক আশপাশে এগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকার তথ্য নিশ্চিত হয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড।

গত রোববার (১৮ জুন) সাগরে ডুব দেওয়ার এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর ছোট আকারের ওই ডুবোজাহাজটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কয়েকদিন ধরে উদ্ধার অভিযান চালালেও এর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে খোঁজ মিললেও ততক্ষণে সব শেষ। সাবমেরিনের ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটে এর পাঁচ আরোহীর সবাই প্রাণ হারিয়েছেন।

আরও পড়ুন: সাবমেরিন টাইটানের কেউই বেঁচে নেই

মধ্য আটলান্টিক মহাসাগরের তিন হাজার ৮০০ মিটার বা সাড়ে ১২ হাজার ফুট গভীরে আটলান্টিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আটদিনের এই ভ্রমণের জন্য আড়াই লাখ ডলার খরচ করতে হয়।

এ ধরনের ছোট আকারের সাবমার্সিবল বা ডুবোজাহাজে সাধারণত একজন চালক এবং তিনজন যাত্রী থাকে। আরেকজন থাকে ‘কনটেন্ট এক্সপার্ট’ যিনি সাগরের নিচের সবকিছু পর্যটকদের কাছে ব্যাখ্যা করেন।

 টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।