স্বামী ইসরায়েলি কারাগারে

পাচার করা শুক্রাণুতে চার সন্তানের জন্ম দিলেন ফিলিস্তিনি নারী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৩৪ পিএম, ১৫ জুন ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

স্বামী ১৫ বছর ধরে কারাগারে বন্দি। এরপরও তারই ঔরসজাত চার সন্তানের মা হয়েছেন এক নারী, সেটিও ঘটেছে একসঙ্গে। অর্থাৎ, একসঙ্গে চার জমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ওই নারী। আর তাদের বাবা কারাগারে থাকা লোকটিই। ভাবছেন কীভাবে সম্ভব? এটি সম্ভব হয়েছে কারাগার থেকে শুক্রাণু পাচারের মাধ্যমে।

কারাগার থেকে প্রথমে ওই ব্যক্তির শুক্রাণু লুকিয়ে সংগ্রহ করেছে পরিবার। এরপর সেটি আইভিএফ প্রক্রিয়ায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে স্ত্রীর ডিম্বাশয়ে। এভাবেই কারাগারে থাকা স্বামীর ঔরসে চার সন্তানের মা হয়েছেন ওই নারী। সম্প্রতি এ ঘটনাটি ঘটেছে ফিলিস্তিনে।

আরও পড়ুন>> দ্বি-রাষ্ট্রে বিশ্বাস নেই, ইন্তিফাদায় ঝুঁকছে ফিলিস্তিনের তরুণ প্রজন্ম

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে জানা যায়, গত ৩ মে পূর্ব জেরুজালেমের আল-মাকাসেদ হাসপাতালে একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন রাসমিয়া নামে ৩৩ বছর বয়সী এক নারী। তার স্বামী আহমেদ শামালি ২০০৮ সাল থেকে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি।

রাসমিয়া জানান, গর্ভধারণের মাত্র সাত মাসের মাথায় তিনি সন্তান প্রসব করেন। এটি খুবই বিপজ্জনক ছিল। শিশুদের শারীরিক অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরের ৩৭ দিন তাদের ইনকিউবেটরে রাখা হয়। অবশেষে গত রোববার (১১ জুন) তারা গাজা উপত্যকায় নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।

আরও পড়ুন>> ইসরায়েলি পতাকা খুলে ফেলে দিলো কাক, ভিডিও ভাইরাল

আহমেদের মা নাজাহ আল-শামালি বলেন, আহমেদ গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে এ নিয়ে তৃতীয়বার আমরা পাচার করা শুক্রাণুর মাধ্যমে নিষিক্ত ভ্রূণ বসানোর চেষ্টা করি। আল্লাহকে ধন্যবাদ, এবার সেটি সফল হয়েছে।

তিনি বলেন, এটি ছিল অত্যন্ত আনন্দের মুহূর্ত। আমাদের এবং আহমেদের ওপর এর প্রভাব ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না।

জানা গেছে, নবজাতকদের মধ্যে তিনটি ছেলে ও একটি মেয়ে। তাদের নাম রাখা হয়েছে রহিম, রাকান, রায়ান এবং নাজাহ। তাদের ছবি কারাবন্দি বাবার কাছে পাঠানো হয়েছে। আহমেদ অবশ্য গ্রেফতার হওয়ার আগেই আরও দুই সন্তানের বাবা হয়েছিলেন। তাদের বয়স এখন ১৫ ও ১৭ বছর।

আরও পড়ুন>> আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলের হামলা, ৪০০ ফিলিস্তিনি গ্রেফতার

দাদি নাজাহ বলেন, এই বাচ্চাগুলো তাকে তার ছেলের কথা মনে করিয়ে দেয়। দখলদারবিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বর্তমানে ১৮ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন আহমেদ। আর তিন বছর পরেই তার মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।

নাজাহ বলেন, ‘স্বাধীনতার দূতদের’ জন্ম দেওয়ার জন্য শুক্রাণু পাচারসহ সব ধরনের দখলদারীকে চ্যালেঞ্জ করে চলেছে ফিলিস্তিনি বন্দিরা।

আরও পড়ুন>> দখলদার ইসরায়েল আজ বিশ্বের ৪র্থ সুখী দেশ, কেমন আছে ফিলিস্তিন?

ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স ক্লাবের হিসাবমতে, বন্দিদের শুক্রাণু পাচারের মাধ্যমে ২০২২ সালে ফিলিস্তিনে সাতটি শিশুর জন্ম হয়েছে। স্থানীয় আল-আরাবি আল-জাদিদ পত্রিকার তথ্য বলছে, গত ১০ বছরে এই প্রক্রিয়ায় জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা অন্তত ১২২টি।

সূত্র: আল-জাজিরা, মিডল ইস্ট আই, মিডল ইস্ট মনিটর
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।