চীনের পর জাপানেও উষ্ণতার রেকর্ড, চোখ রাঙাচ্ছে এল নিনো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:১২ এএম, ০৫ জুন ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

অডিও শুনুন

কিছুদিন আগেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় ১০০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে চীনের সাংহাই নগরীতে। এবার এশিয়ার আরেক দেশ জাপানেও নতুন রেকর্ড গড়লো উষ্ণতা। ১২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ বসন্তকাল পার করেছে দেশটি। এই অবস্থার জন্য গ্রিনহাউস গ্যাসের পাশাপাশি এল-নিনোকে দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে দেশটিতে তাপমাত্রা ছিল গড়ের চেয়ে ১ দশমিক ৫৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। ১৮৯৮ সালে সংস্থাটি তাপমাত্রার হিসাব রাখা শুরুর পর থেকে জাপানে এটিই ছিল উষ্ণতম বসন্তকাল।

এর আগে, গত ২৯ মে সাংহাইয়ে তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা শহরটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পুরোনো রেকর্ডের চেয়ে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে আবহাওয়া প্রতিকূল হয়ে ওঠার প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এগুলো আরও নিয়মিত হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, গত মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে দেশটির আশপাশে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ছিল ১৯৮২ সালের পর থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ।

জাতিসংঘ সতর্ক বলেছে, তারা প্রায় নিশ্চিত যে, ২০২৩ থেকে ২০২৭ সাল হবে এযাবৎকালের সবচেয়ে উষ্ণ পাঁচ বছর সময়কাল।

এসবের জন্য আংশিকভাবে দায়ী করা হচ্ছে এল নিনো পরিস্থিতিকে। পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের পেরু-ইকুয়েডর উপকূল বরাবর কোনো কোনো বছর এক প্রকার দক্ষিণমুখী উষ্ণ সামুদ্রিক স্রোতের প্রবাহ লক্ষ্য করা যায়। এটিকে এল নিনো বলা হয়ে থাকে। এর বিপরীত দশার নাম লা নিনা। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে শীতল সামুদ্রিক স্রোত তৈরি হয়।

সাধারত চার থেকে ১০ বছর পরপর এল নিনো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এটি সৃষ্টি হলে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং কোনো কোনো এলাকায় খরাও দেখা দিতে পারে।

বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনো সৃষ্টি হতে শুরু করবে। সবশেষ ২০১৮-১৯ সালে দেখা দিয়েছিল এই পরিস্থিতি।

জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) বলছে, পরবর্তী যেকোনো পাঁচ বছর সময়কালে প্যারিস চুক্তিতে নির্ধারিত বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সর্বোচ্চ সীমা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে যাওয়ার আশঙ্কা দুই-তৃতীয়াংশ। ২০২২ সালে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ছিল ১৮৫০-১৯০০ সালের গড় থেকে ১ দশমিক ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এশিয়ার দেশগুলোতে ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা বাড়ছে। কারণ উষ্ণতর বায়ুমণ্ডল তুলনামূলক বেশি পানি ধরে রাখে।

২০১৮ সালে জাপানে ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা-ভূমিধসে দুই শতাধিক মানুষ প্রাণ হারান। ২০২১ সালেও দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিধস ২৭ জনের প্রাণ নিয়েছে।

সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি

কেএএ/এএসএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।