শুকিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের অর্ধেকের বেশি জলাশয়
শুকিয়ে যেতে বসেছে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি হ্রদ ও জলাশয়। এর ফলে ভয়াবহ হুমকিতে পড়েছে কৃষি, জলবিদ্যুৎ ও মানুষের পানযোগ্য পানির ভবিষ্যৎ। গত বৃহস্পতিবার (১৮ মে) প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি বড় হ্রদ ও জলাশয় শুকিয়ে গেছে বা শুকিয়ে যাওয়ার মুখে। এর একটি কারণ অবশ্যই বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। তার সঙ্গে রয়েছে মানুষের হঠকারী আচরণও।
গবেষকদের বক্তব্য, বিগত দিন দশকে কাস্পিয়ান সাগর থেকে শুরু করে লেক টিটিকাকার মতো বিশ্বের অন্যতম প্রধান জলাশয়গুলোতে প্রতি বছর প্রায় ২২ গিগাটন করে পানি কমেছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে বহুগুণ বেশি।
আরও পড়ুন>> বাংলাদেশকে পানি দিলে আমার আপত্তি নেই: মমতা
ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞানের গবেষক ফ্যাংফ্যাং ইয়াও এই গবেষণা দলের প্রধান। তিনি বলেছেন, প্রাকৃতিক হ্রদগুলো শুকিয়ে যাওয়ার পেছনে ৫৬ শতাংশ অবদান বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং মনুষ্য ব্যবহারের। এর মধ্যে বড় কারণ উষ্ণতা।
বিশ্বের দুই হাজার জলাশয় ও হ্রদ পর্যবেক্ষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ১৯৯২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এসব হ্রদ ও জলাশয়ের স্যাটেলাইট ছবি পরীক্ষা করা হয়েছে এবং সেখান থেকেই এই ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন>> বিশ্বরেকর্ড: ৭৪ দিন পানির নিচে বসবাস
গবেষকরা দেখেছেন, মানুষের দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার, বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন এবং ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা বিশ্বব্যাপী জলাশয়ের পানির স্তরকে নিচে নেমে যেতে বাধ্য করেছে। ১৯৯২ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে ৫৩ শতাংশ হ্রদের পানি কমেছে।
শুকিয়ে যাওয়া এসব হ্রদ এলাকায় বসবাস করে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় তারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক অঞ্চলে পানির অভাব দেখা দিয়েছে।
More than half of the world’s largest lakes have declined over the past three decades.
— Science Magazine (@ScienceMagazine) May 18, 2023
Nearly one-quarter of the world’s population resides in a basin with a drying lake, which underscores the importance of management solutions. Learn more in Science: https://t.co/Z3Nb6rFqDu pic.twitter.com/T3scUHC4KJ
জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম মাপকাঠি গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধি। এর ফলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বদলে গেছে। আগে যেখানে যেমন বৃষ্টি হতো, এখন তা হচ্ছে না। এর ফলে স্বাভাবিক হ্রদগুলোর পলি আগে যেভাবে জমতো, এখন তা বদলে গেছে। হ্রদ ও জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ার পেছনে এটিকে অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন>> রেকর্ড তাপমাত্রার মধ্যে ঢাকায় পানির সংকট
গবেষকরা বলেছেন, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে না পারলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও হ্রদ এবং জলাশয় শুকিয়ে যাবে। আর তেমনটি ঘটলে তার প্রভাব হবে ধ্বংসাত্মক।
সূত্র: রয়টার্স, ডয়েচে ভেলে
কেএএ/