অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া নেই

ব্যাগে করে সন্তানের মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরলেন বাবা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪০ পিএম, ১৫ মে ২০২৩

ফের শরীর হিম করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটলো ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্যের উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে টাকার অভাবে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে পারেননি এক বাবা। সে কারণে পাঁচ মাসের মৃত সন্তানের দেহ ব্যাগে নিয়ে হাসপাতাল ছাড়লেন অসহায় ওই ব্যক্তি। 

জানা গেছে, কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মুস্তাফানগর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা অসীম দেবশর্মার স্ত্রী যমজ সন্তানের জন্ম দেন। পাঁচ মাসের দুই শিশুই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের দুজনকেই কালিয়াগঞ্জ ষ্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তাদের অবস্থার অবনতি হওয়ায় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে সেই দুই শিশুকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এক শিশু সুস্থ হয়ে ওঠে। তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান অসীম দেবশর্মার স্ত্রী। পরে আর এক শিশুর মৃত্যু হয়।

অসীম দেবশর্মা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। অর্থের অভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোনো অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করতে পারেননি তিনি।এরপর ছেলের মরদেহ একটি ব্যাগে ভরে বেসরকারি বাসে করে রায়গঞ্জ পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে আরেকটি বাসে করে কালিয়াগঞ্জে যান।

অসীম দেবশর্মা বলেন, আমার সন্তানের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওরা জানতে চাইল রোগী কে? আমি বললাম রোগী না, আমার ছেলে মারা গেছে। ওরা শুনে বললো, নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুমতি নেই। ৮ হাজার টাকা লাগবে। অত টাকা দেওয়ার মতন সামর্থ্য আমার ছিল না। তাই বাসে উঠে পড়লাম।

দুই শিশুর চিকিৎসা চালাতে গিয়ে অসীম বাবু সর্বস্বান্ত। ছেলের মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৮ হাজার রুপি ছিল না অসহায় বাবার কাছে। তাই একটি ব্যাগে ছেলের মৃতদেহ নিয়ে বাসে উঠে পড়েন হতভাগ্য এই বাবা।

এই ঘটনায় শাসক দলকে ইঙ্গিত করে পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, নিজের শিশু সন্তানের মরদেহ ব্যাগে ভরতে বাধ্য হয়েছেন বাবা। তার কাছে অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া ছিল না। এটাই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল। দুঃখজনক হলেও এটাই বাস্তব।

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।