বাংলাদেশ-ভারত দু’দেশের ভোটার তালিকায় নাম তৃণমূল নেত্রীর!

ধৃমল দত্ত
ধৃমল দত্ত ধৃমল দত্ত , পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১০:৪৯ এএম, ০৬ মে ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে এক নারীর। তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে তিনি ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীও হয়েছিলেন। তার নাম আলোরানি সরকার। তৃণমূলের এই নেত্রীকে নিয়ে সম্প্রতি তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যে।

জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ দক্ষিণে তৃণমূল প্রার্থী আলোরানি সরকার বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদারের কাছে দুই হাজার চার ভোটে পরাজিত হন। এই ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তৃণমূল প্রার্থী।

আরও পড়ুন>> ফারাক্কার পানিচুক্তি: আবারও কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়ে ‘দোষ’ চাপালেন মমতা

গত বছরের ২২ মে আলোরানি সরকারের মামলাটি খারিজ করে দেন কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর এজলাসে মামলাটি ওঠার পর বনগাঁ দক্ষিণের জয়ী প্রার্থী (বিধায়ক) স্বপন মজুমদারের আইনজীবী অরিন্দম পাল জানান, আলোরানি সরকারের নাম বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় রয়েছে। এ বিষয়ে আদালতে তথ্যপ্রমাণও উপস্থাপন করেন তিনি।

তবে মামলার বাদী আলোরানি সরকার সেই তথ্যের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। তখন বিচারপতি বিবেক চৌধুরী বলেন, ভারতের সংবিধানে দ্বৈত নাগরিকত্বের জায়গা নেই। ফলে বাদী নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে দাবি করতে পারেন না। তিনি ভারতের নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেন না। এরপর এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে আলোরানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

আরও পড়ুন>> সন্তানকে নদীতে ছুড়ে ফেললেন মা, প্রাণ বাঁচালেন সাহসী যুবক

তবে হাইকোর্টের একক বেঞ্চে মামলাটি খারিজ হওয়ার পর আলোরানি সরকার ডিভিশন বেঞ্চে ফের মামলা করেন। এবার সেখানেও ধাক্কা খেলেন এ তৃণমূল নেত্রী। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্য বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক, তথ্য-প্রমাণ দেখে মামলাটি খারিজ করার রায় দেন।

এই বিষয়ে আলোরানি সরকার বলেন, আমি ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে (সুপ্রিম কোর্ট) যাবো। এছাড়া বনগাঁ দক্ষিনের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারের বিরুদ্ধে অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকারও অভিযোগ তোলেন তিনি।

আরও পড়ুন>> স্কেটিং করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে আসছে ১০ বছরের বালক

অন্যদিকে বিধায়ক স্বপন মজুমদার বলেছেন, দেশের নির্বাচন কমিশনকে মহামান্য আদালত নির্দেশ দিয়েছেন আলোরানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। ব্যবস্থা নিলেই আমি এফআইআর করে বাংলাদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করবো।

জানা গেছে, ১৯৬৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার বৈদ্যবাটিতে আলোরানি সরকারের জন্ম। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশের চিকিৎসক হরেন্দ্রনাথ সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর পাকাপাকিভাবে বরিশালের উজিরপুরে থাকতেন আলোরানি। বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় নাম ওঠে তার, বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রও পান এ নারী। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কাঁচরাপাড়ায় বসবাস করছেন তিনি।

কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।