পশ্চিমবঙ্গ
ধর্ষণের পর কিশোরীকে খুনের অভিযোগ, বাবা-ছেলে গ্রেফতার
পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি
দিনভর উত্তেজনার পর অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে কিশোরী হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ও তার বাবা। শুক্রবার (২১ এপ্রিল) রাতে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের কথা জানান রায়গঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মো. সানা আখতার।
আরও জানা গেছে, কিশোরীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গঠন করা হয়েছে মেডিক্যাল বোর্ড। তবে এখনো থমথমে কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা সংলগ্ন পালইবাড়ি এলাকা। জানা যায়, নিহত কিশোরী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল।
এর আগে কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা পালইবাড়ি এলাকা। সেসময় স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ তোলেন মেয়েটিকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে এবং তারা মরদেহ উদ্ধারের আগে অপরাধীকে গ্রেফতারের দাবি তোলেন। কিন্তু পুলিশ তাদের দাবি না মানায় দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়।
দিনভর টান টান উত্তেজনা চলার পর শুক্রবার রাতে রায়গঞ্জের নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার মো. সানা আখতার। তিনি বলেন, মেয়েটি বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) থেকে নিখোঁজ ছিল। শনিবার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত যুবক ও তার বাবার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশ সুপার জানান, কিশোরীর মরদেহের পাশ থেকে বিষ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ঘটনার আসল কারণ এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে শুক্রবার সকালে মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার করতে যায় কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। সেময় এলাকাবাসী পুলিশকে বাধা দেয়। তারা মরদেহ উদ্ধারের আগে অপরাধীকে গ্রেফতারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন উত্তেজিত এলাকাবাসী।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয় পালইবাড়ি এলাকায়। নামানো হয় র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। পুরো এলাকায় থমথমে পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এদিকে ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্ক। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইট করে বলেন, বাংলায় আরও এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুন করা হলো। পালটা জবাবে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ঘটনাটি নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক। দোষীরা কোনোভাবেই ছাড় পাবে না। তবে বিরোধী দলনেতা যেভাবে এটিকে হাতিয়ার করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে আঙুল তুলছেন, তা মোটেই কাম্য নয়।
এসএএইচ/জেআইএম