সর্বকালের সবচেয়ে বড় মহড়া শুরু করলো যুক্তরাষ্ট্র-ফিলিপাইন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৫৬ এএম, ১১ এপ্রিল ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

তাইওয়ানের চারপাশে চীনের বড় আকারের মহড়া শেষ হওয়ার একদিন পরই সর্বকালের বৃহত্তম যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইন। এ মহড়া ফিলিপাইনের ইসাবেলা, কাগায়ান ও পালাওয়ান প্রদেশের আশপাশে পরিচালিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বলা হচ্ছে, ওই তিনটি প্রদেশ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ইসাবেলা ও কাগায়ানের উত্তর পাশে তাইওয়ানের অবস্থান। আর পালাওয়ান দক্ষিণ চীনে সাগরের বিতর্কিত স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের কাছে অবস্থিত। এ দ্বীপপুঞ্জে চীন রানওয়ে ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থায় সজ্জিত কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে তাদের সেনাবাহিনীকে স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের আশেপাশে পাঠিয়ে দিয়েছে। স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ ফিলিপাইনের অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবস্থিত, কিন্তু বেইজিং এ অঞ্চলটিকে নিজেদের দাবি করে আসছে।

আরও পড়ুন>> তাইওয়ানকে ‘অবরুদ্ধ’ করার মহড়া চালাচ্ছে চীন

জানা গেছে, এবারের মহড়ায় ১৭ হাজারেরও বেশি সৈন্য অংশ নেবেন, যাদের মধ্যে ১২ হাজার যুক্তরাষ্ট্রের ও ৫ হাজার ৪০০ জন সৈন্য ফিলিপাইনের। তাছাড়া এবার অস্ট্রেলিয়ান নৌবাহিনীর অন্তত ১০০ জনেরও বেশি সদস্য ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলতে থাকা এ মহড়ায় অংশ নেবেন ও অন্যান্য ১২টি দেশের সামরিক কর্মীরা পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশ নেবেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় তাইওয়ানিজ প্রেসিডেন্ট সাই ইঙ-ওয়েনের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় তিনদিনের বিশাল সামরিক মহড়া শুরু করে চীন। ৮-১০ এপ্রিল পর্যন্ত তাইওয়ানের চারপাশে চলে সে মহড়া।

জানা যায়, ফিলিপাইনে ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মহড়া আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। এ বছরের শুরুতে কয়েক দশকের পুরনো জোটকে এগিয়ে নিতে ওয়াশিংটন ও ম্যানিলা নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তি করে। সেসময় ‍উভয় দেশই সবচেয়ে বড় বার্ষিক বালিকাতান মহড়ার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়।

আরও পড়ুন>> তাইওয়ান নিয়ে মার্কিন-চীনা নীতি মানতে নারাজ ম্যাক্রোঁ

তাছাড়া ওই চুক্তির আওতায় ফিলিপাইন তাদের আরও চারটি সামরিক ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার দেয়। এর মধ্য দিয়ে ফিলিপাইনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার পাওয়া ঘাটির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়।

নতুন যে চারটি ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশাধিকার পেয়েছে, সেগুলো হলো- কাগায়ন প্রদেশের সান্তা আনার ক্যামিলো ওসিয়াস নৌ-ঘাঁটি ও লাল-লো বিমানবন্দর। এছাড়া রয়েছে ইসাবেলা প্রদেশের গামুতে ক্যাম্প মেলচোর ডেলা ক্রুজ ও পালাওয়ান প্রদেশের কাছাকাছি অবস্থিত বালাবাক দ্বীপ।

বর্ধিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তির (ইডিসিএ) এ সম্প্রসারণ, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ফিলিপাইনের কৌশলগত গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে। দক্ষিণ চীনে সাগর ও স্ব-শাসিত তাইওয়ান নিয়ে চীনের তৎপরতার কারণে সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যেই ওই চুক্তি কার্যকর হয়।

আরও পড়ুন>> এশিয়ার ইউক্রেন হবে তাইওয়ান?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে ২০১৪ সালের এপ্রিলে ইডিসিএ সই হয়। এ চুক্তির আওতায় যৌথ প্রশিক্ষণ, আগাম সরঞ্জাম মোতায়েন ও রানওয়ে তৈরি, জ্বালানি মজুদের স্থান ও সামরিক আবাসনের মতো সুবিধা নির্মাণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ফিলিপাইনের ঘাঁটিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে চুক্তিতে বলা হয়, এটি ফিলিপাইনে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী উপস্থিতি নয়।

সূত্র: বিবিসি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।