হিজাব না পরা নারীদের শনাক্তে ক্যামেরা বসাচ্ছে ইরান
অডিও শুনুন
মাথায় হিজাব বা স্কার্ফ না পরা নারীদের শনাক্ত করতে উন্মুক্ত স্থানগুলোতে ক্যামেরা বসাচ্ছে ইরান। ইরানি পুলিশের দাবি, যথাযথ পোশাক না পরা নারীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় লাগাম টেনে ধরার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খবর আল-জাজিরার।
শনিবার (৮ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে ইরানি পুলিশ বলেছে, হিজাববিহীন নারীদের শনাক্ত করার পরে এর ‘পরিণাম সম্পর্কে সতর্কতামূলক বার্তা’ দেওয়া হবে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য ‘হিজাব আইনবিরোধী প্রতিরোধ মোকাবিলা করা’। এ ধরনের প্রতিরোধ দেশের আধ্যাত্মিক ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করে এবং নিরাপত্তাহীনতা ছড়িয়ে দেয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
আরও পড়ুন>> বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার দায়ে আরও তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিলো ইরান
পুলিশ বলেছে, হিজাব আইন লঙ্ঘন করে কোনো ধরনের ব্যক্তিগত বা সামষ্টিক আচরণ এবং পদক্ষেপ সহ্য করা হবে না।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর থেকে বাধ্যতামূলক হিজাব আইন শিথিলকরণ নিয়ে ইরানে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের মধ্যেই এই ঘোষণা এলো।
হিজাব আইন লঙ্ঘন
১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পরে আরোপিত আইন অনুসারে, ইরানে নারীদের চুল ঢেকে রাখা এবং শরীর ঢাকতে লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক পরা বাধ্যতামূলক। এই আইন লঙ্ঘনকারীরা জনসম্মুখে তিরস্কার, জরিমানা বা গ্রেফতারির মুখোমুখি হতে পারেন।
আরও পড়ুন>> হিজাব ইস্যুতে বিক্ষোভে নিহত ২০০, স্বীকার করলো ইরান
পর্দাকে ইরানি সভ্যতার অন্যতম ভিত্তি এবং ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্রের একটি বাস্তব নীতি’ হিসেবে বর্ণনা করে গত ৩০ মার্চ ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এই বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
তবে গত সেপ্টেম্বরে ইরানের ‘নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে বহু ইরানি নারী হিজাব ছাড়াই বাইরে বেরিয়ে আসছেন। নারীদের জন্য নির্ধারিত পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মাহসাকে আটক করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন>> নৈতিকতা পুলিশকে বিলুপ্ত ঘোষণা করলো ইরান
তার মৃত্যুর জেরে ইরানে ব্যাপক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। কয়েক মাস ধরে চলা এ বিক্ষোভ দমনে বিরোধীদের ওপর চড়াও হয় নিরাপত্তা বাহিনী। তাতে প্রাণ হারিয়েছেন বহু বিক্ষোভকারী।
এরপরও এখনো গ্রেফতারের ঝুঁকি নিয়ে বাধ্যতামূলক পোশাকবিধি অমান্য করে, অর্থাৎ হিজাব ছাড়াই বিভিন্ন শপিংমল, রেস্তোরাঁ, দোকান ও রাস্তাঘাটে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে বহু নারীকে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও খোলা চুলের ভিডিও আপলোড করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অনেকে।
আরও পড়ুন>> হিজাব ছাড়াই দাবা খেলায় অংশ নিলেন ইরানি তরুণী
কিন্তু হিজাববিরোধীদের মোকাবিলায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে ইরান সরকার, আর তাতে সমর্থন দিচ্ছে কট্টরপন্থিরা। গত সপ্তাহে হিজাব না পরায় দুই নারীর মাথায় এক ব্যক্তি দই ঢেলে দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কেএএ/