তাইওয়ান ছেড়ে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক যাত্রা শুরু করলো হন্ডুরাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:২০ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

তাইওয়ানের সঙ্গে কয়েক দশকের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে মধ্য আমেরিকার দেশ হন্ডুরাস। তাইওয়ানের বদলে রোববার (২৬ মার্চ) থেকে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক যাত্রা শুরু করেছে দেশটি। এদিকে, তাইওয়ানিজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে বেইজিং দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে তাইপের সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখতে অত্যধিক পরিমাণ অর্থ দাবি করার অভিযোগ তুলেছেন।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (২৫ মার্চ) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় হন্ডুরাস। বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, তারা গণপ্রজাতন্ত্রী চীনকে বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এখন থেকে তারা সমগ্র চীনের প্রতিনিধিত্ব করবে ও তাইওয়ান চীনা ভূখণ্ডেরই অংশ।

আরও পড়ুন>> ‘চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাত সহ্য করার ক্ষমতা বিশ্বের নেই’

রয়টার্স বলছে, তাইওয়ানের সঙ্গে হন্ডুরাসের গভীর সম্পর্কের সমাপ্তি প্রত্যাশিতই ছিল। কারণ এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে গত সপ্তাহে চীন সফর করেছিলেন হন্ডুরাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এমনকি, সম্প্রতি হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট জিওমারা কাস্ত্রোও বলেছিলেন, তার সরকার বেইজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে।

জানা যায়, নিজেদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশগুলোকে তাইওয়ানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রাখার অনুমতি দেয় না চীন সরকার। কারণ গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত এ দ্বীপটিকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে চীন। যদিও বেইজিংয়ের এ দাবি দৃঢ়ভাবে বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে তাইপেই।

হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট জিওমারা কাস্ত্রো তার নির্বাচনী প্রচারণায় তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ও চীনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক যাত্রা শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর নিজের অবস্থান পাল্টে তাইওয়ানের সঙ্গেম্পর্ক বজায় রাখার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চলতি মাসের মাঝামাঝিতে জিওমারা কাস্ত্রো তার অবস্থান পাল্টে ফেলেন।

আরও পড়ুন>> সৌদি-ইরানকে এক করলো চীন, পশ্চিমাদের মাথাব্যথা

এদিকে হন্ডুরাসের এ ঘোষণার পরপরই রোববার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তাইওয়ান। এদিন এক বক্তৃতায় তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ বলেন, জিওমারা কাস্ত্রো বরাবরই ‘চীনের প্রলোভনে’ প্রভাবিত হয়ে আসছিল। এমনকি, কাস্ত্রো সরকার আমাদের কাছে বিলিয়ন ডলারের বিশাল অর্থনৈতিক সহায়তা চেয়েছিল।

‘তাইওয়ান ও চীনের দেওয়া সহায়তা কর্মসূচির মূল্যও তুলনা করেছে হন্ডুরাস। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাস সব প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ করছে ও প্রতিটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে।’

এদিকে তাইওয়ানের সঙ্গে হন্ডুরাসের সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি চীন। তবে গত সপ্তাহে চীন বলেছিল, তারা হন্ডুরাসের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে প্রস্তুত।

আরও পড়ুন>> চীন-রাশিয়া-ইরানের যৌথ সামরিক মহড়া

অন্যদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, হন্ডুরাসের এ পদক্ষেপ সার্বভৌম। তবে তাদের মনে রাখা উচিত ছিল, চীন কূটনৈতিক স্বীকৃতির বিনিময়ে চীন যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়, তার শেষ পর্যন্ত অপূর্ণই রয়ে যায়। আর হন্ডুরাসের এ সিদ্ধান্তে তাইপেই-ওয়াশিংটনের সম্পর্কে ফাটল ধরবে না, বরং সম্প্রসারিত হবে।

সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা

এসএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।