জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ

পাকিস্তান পারেনি, বাংলাদেশ পেরেছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:২৩ পিএম, ০৭ মার্চ ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান যা পারেনি, তা বাংলাদেশ পেরেছে। বাংলাদেশ একটি সুষ্ঠু জনসংখ্যা নীতি প্রণয়ন করতে পেরেছে। নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে জন্মহার। কিন্তু এই কাজে পুরোপুরি ব্যর্থ পাকিস্তান। এসব কথা বলেছেন পাকিস্তানেরই সাবেক এক মন্ত্রী। তার দাবি, ১০ বছর ধরে বাংলাদেশে প্রজননের যে হার, তা যদি পাকিস্তানেও থাকতো, তাহলে পাকিস্তানিদের মাথাপিছু জিডিপি অন্তত ১৫ শতাংশ বেশি হতো।

পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইলের মতে, দেশটির বর্তমান আর্থ-সামাজিক দুর্দশার বড় কারণ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পনার অভাব। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তাদের সামনে একটাই পথ খোলা, তা হলো জনসংখ্যা পরিকল্পনায় নজর দেওয়া।

সম্প্রতি করাচিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাবেক অর্থমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানে যদি প্রতি বছর ৫৫ লাখ শিশু জন্ম নেয়, তাহলে জনসংখ্যা পরিকল্পনায় মনোযোগ দেবেন কখন? তিনি বলেন, আমরা এখানে আটকে গেছি।

আরও পড়ুন>> আইএমএফের আরও একটি শর্তে পাকিস্তানের ‘আত্মসমর্পণ’

jagonews24

বক্তব্যে বাংলাদেশ, তিউনিশিয়া ও মিশরের নাম উল্লেখ করে মিফতাহ ইসমাইল বলেন, পাকিস্তানের মতো এসব দেশেও মুসলিম সমাজ বিদ্যমান। অথচ তারা সবাই জনসংখ্যা পরিকল্পনা করেছে, শুধু আমরা করিনি।

সাবেক মন্ত্রী আরও বলেন, গত ১০ বছরে বাংলাদেশের প্রজনন হারের সঙ্গে যদি আমাদের মিল থাকতো, তাহলে দেশের মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) অন্তত ১৫ শতাংশ বেশি হতো।

আরও পড়ুন>> বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে তেলের দাম কমালো পাকিস্তান

সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলাদেশের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার মতো অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে উল্লেখ করেন এ পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ।

তিনি আরও বলেন, গত ৭৫ বছরে ‘ভুল নীতির’ কারণেই সমস্যায় জর্জরিত পাকিস্তান। সাবেক মন্ত্রী বলেন, আমরা যখন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করি, তখন প্রথম ১১ বছরে সাতজন প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন করেছি। তারপর ছিল বিচারপতি মুনির পরিচালিত বিচারব্যবস্থা, যা আইয়ুব খান, ইস্কান্দার মির্জা ও অন্যান্য শাসকদের জারি করা সামরিক আইন অনুমোদন করেছিল।

আরও পড়ুন>> মন্ত্রী-আমলাদের ভাতা-পরিবহন ব্যয় কমাচ্ছে পাকিস্তান

jagonews24

পিএমএল-এন নেতা বলেন, আমরা যখন বারবার সরকারপ্রধান পরিবর্তন করছিলাম, তখন পাঁচটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছিল ভারত। গবেষণা ও শিক্ষার মাধ্যমেই তারা আজকের এই পর্যায়ে পৌঁছেছে।

আরও পড়ুন>> দেশের জনসংখ্যা বেড়ে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ

সরকারি হিসাবে, বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেশের জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। তবে চূড়ান্ত ফলাফলে আরও ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ২৯৫ জন যোগ করা হয়।

গত বছরের ২৭ জুলাই বিবিএসের মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে সে সময় বলা হয়, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪, নারী আট কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ এবং তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ১২ হাজার ৬২৯ জন।

আরও পড়ুন>> দেশে ১০০ নারীর বিপরীতে পুরুষ ৯৮ জন

দেশে বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২২ শতাংশ, এক দশক আগে যা ছিল ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১ হাজার ১১৯ জন, এক দশক আগে যা ছিল ৯৭৬ জন। মোট জনংখ্যার ৯১ দশমিক ০৪ শতাংশ মুসলিম, হিন্দু ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। দেশে মোট সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, পাকিস্তানের বর্তমান জনসংখ্যা আনুমানিক ২৪ কোটি ২৯ লাখ। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৪৪ জন।

সূত্র: ডন, উইকিপিডিয়া
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।