আঞ্চলিক যুদ্ধকে বিশ্বযুদ্ধে রূপ দিতে চায় পশ্চিমারা: পুতিন
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোট একটি আঞ্চলিক যুদ্ধকে বিশ্বযুদ্ধে রূপান্তর করতে চায়। আমরা তাদের এ পরিকল্পনা আগেই বুঝতে পেরেছি ও সে অনুযায়ী আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাবো। কারণ, তাদের ওই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে রাশিয়ার অস্তিত্ব জড়িয়ে রয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছরপূর্তিতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানান।
আরও পড়ুন>> যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্রচুক্তি স্থগিত করলো রাশিয়া
পুতিন বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো এ সংঘাতে পুরো বিশ্বকে জড়াতে চায়। কারণ তারা ভাবছে, এর মাধ্যমে রাশিয়াকে পরাজিত করা সম্ভব হবে। কিন্তু তাদের এ ধারণা একেবারেই ভুল। রাশিয়া যেসব প্রতিবন্ধকতা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছে, সেগুলোর জবাব অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেওয়া হবে।
যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, পশ্চিমা মোড়লরা রাশিয়ার ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে এ সংঘাত চাপিয়ে দিয়েছেন। যুদ্ধ ছাড়া আমাদের আর কিছু করার ছিল না। আর এখন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
‘ইউক্রেনের জনগণ জেলেনস্কি ও পশ্চিমা শাসকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ ইউক্রেনকে রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে শাসন করছে।’
আরও পড়ুন>> যেভাবে গোপনে ইউক্রেনে পৌঁছালেন বাইডেন
তিনি বলেন, রাশিয়াকে পরাজিত করা অসম্ভব। তাছাড়া অধিকাংশ রুশ নাগরিক এ যুদ্ধকে সমর্থন করেছেন। তাই আমরা কোনোভাবেই পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের সামনে মাথা নত করবো না।
বক্তব্যের একপর্যায়ে পুতিন উপস্থিত সবাইকে যুদ্ধে নিহত রুশ সেনাদের প্রতি দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করতে বলেন। পরে তিনি নিহতদের পরিবারের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ইউক্রেন যুদ্ধ পুতিনের জন্য সবচেয়ে বাজি হিসেবে দেখা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতো পশ্চিমের অন্য নেতারাও বলছেন, এ বাজিতে পুতিনকেই হারতে হবে।
আরও পড়ুন>> মস্কো সফরে চীনা শীর্ষ কূটনীতিক
অন্যদিকে পুতিনের দাবি, আগ্রাসী পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। শত্রুরা রাশিয়াকে বিভক্ত করতে চায় ও দেশটির বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করতে চায়।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রুশ সেনাবাহিনী। এরপর ওই বছরের শেষের দিকে তিনটি বড় যুদ্ধক্ষেত্রে পিছু হটতে বাধ্য হয় রাশিয়া। এরপরও ইউক্রেনের প্রায় এক পঞ্চমাংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে রুশ বাহিনী। এ যুদ্ধে হাজার হাজার সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।
আরও পড়ুন>> রুশ কূটনীতিকদের নেদারল্যান্ডস ছাড়ার নির্দেশ
সূত্র: রয়টার্স
এসএএইচ