ভূমিকম্প

তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়ালো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৫৬ এএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে ধ্বংসস্তূপে এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। এ পর্যন্ত দেশ দুটিতে ভয়াবহ এ দুর্যোগে ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শুধু তুরস্কেই ৩ লাখ ৪৫ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট ধসে পড়েছে। এখনো নিখোঁজ বহু মানুষ।

আরও পড়ুন> ভূমিকম্প/তুরস্কে বহু মানুষের জীবন বাঁচান কয়লাখনির শ্রমিকরা

আধুনিক তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা এবারের ভূমিকম্প। পরিস্থিতি সামাল দিতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোয়ানের সরকার। অন্যদিকে, সিরিয়ার ট্র্যাজেডির শিকার মানুষদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

ভূমিকম্প আঘাত হানার ১২ দিন পর, কিরগিজস্তানের কর্মীরা দক্ষিণ তুরস্কের আন্তাকিয়া শহরের একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি সিরিয়ান পরিবারকে বাঁচানোর চেষ্টা চালায়। এক শিশুসহ ৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করে তারা। মা ও বাবা বেঁচে গেলেও পরে পানিশূন্যতায় শিশুটির মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারী দল।

উদ্ধারকারী দলের এক সদস্য আতায়ে ওসমানভ রয়টার্সকে বলেন, ‘আজ এক ঘণ্টা আগে যখন আমরা উদ্ধারকাজ করছিলাম তখন আমরা চিৎকার শুনতে পাই। আমরা জীবিত মানুষদের খুঁজে পেলে খুশি হই।’ উদ্ধার তৎপরতার অংশ হিসেবে ধ্বংসস্তূপের পাশের রাস্তায় রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্সগুলো।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এএফএডি) প্রধান ইউনুস সেজার বলেন, রোববার রাতে অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতা অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যাবে।

তুরস্কে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ৬৪২ জনে। প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ায় ৫ হাজার আটশ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যদিও এই সংখ্যা কয়েকদিন ধরে একই রকম আছে।

Turkey-2.jpg

জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তাবিষয়ক সম্মেলনের ফাঁকে রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলার সময়, ডব্লিউএফপি’র পরিচালক ডেভিড বিসলে বলেন সিরিয়া ও তুরস্ক সরকার আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করছে। তবে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় তাদের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

সংস্থাটি গত সপ্তাহে তুরস্ক থেকে আরও সীমান্ত ক্রসিং খোলার আহ্বান জানায়।

আরও পড়ুন>ভূমিকম্প/তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি হতে পারে 

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ভূমিকম্পের ফলে আশ্রয়হীন মানুষগুলোর স্বাস্থ্যগত সংকট বেড়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। শনিবার তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন যদিও শ্বাসকষ্টসহ দুর্গত এলাকার মানুষগুলোর শারীরিক জটিলতা বেড়েছে, তবে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি নয়।

অপরদিকে, ভুক্তভোগী পরিবারগুলো এখনো নিখোঁজ স্বজনদের জন্য অপেক্ষা করছেন। যদি তারা ‘অলৌকিকভাবে’ বেঁচে যান সে আশায়। ভবন নির্মাণে মানা হয়নি বিল্ডিং কোড, এমন অভিযোগ করছেন তারা। ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে এসব এলাকায়। যদিও তুরস্কের সরকার ভবন ধসের ঘটনা তদন্ত করবে বলে জানিয়েছে। কারও গাফিলতি পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা জানিয়েছে তারা।

৬ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে যখন মানুষজন ঘুমিয়ে ছিলেন ঠিক তখনই আঘাত হানে এই ভূমিকম্প। মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, সেদিন স্থানীয় সময় ৪টা ১৭ মিনিটে প্রথম কম্পন অনুভূত হয়। এরপর আঘাত হানে আরও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। এতে কেঁপে ওঠে তুরস্ক, সিরিয়া, লেবানন, সাইপ্রাসসহ আরও কয়েকটি দেশ। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তুরস্ক ও সিরিয়া।

সূত্র: রয়টার্স

এসএনআর/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।