একা খাচ্ছেন, ঘুরছেন
যুক্তরাষ্ট্রে একাকী জীবন ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্টের
কিছুদিন আগেও লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। নেতৃত্ব দিতেন ২১ কোটির বেশি মানুষকে। সেই লোকটিই আজ নীরবে নিভৃত জীবনযাপন করছেন কয়েক হাজার মাইল দূরে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ছোট্ট শহরে। সেখানে একা একা শপিংমলে ঘুরছেন, খাচ্ছেন। থাকছেন সাধারণ একটি বাড়িতে। প্রেসিডেন্ট আমলের সেই জাঁকজমক আর নেই তাকে ঘিরে।
বলা হচ্ছে ব্রাজিলের সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোর কথা। কট্টর ডানপন্থি এ নেতা নির্বাচনে হারার পর এখন বাস করছেন ফ্লোরিডার অরল্যান্ডো শহরে।
আরও পড়ুন>> ক্ষমতা ছাড়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রে উড়াল দিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট
নতুন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাগ্রহণ সামনে রেখে গত ডিসেম্বরে ব্রাজিলের রাজধানীতে ভয়াবহ দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই সময় ব্রাসিলিয়ার বিভিন্ন সরকারি ভবনের দখল নেয় বোলসোনারোর সমর্থকরা। এ ঘটনায় ইন্ধন দেওয়ার জন্য অনেকেই সাবেক প্রেসিডেন্টকে অভিযুক্ত করেছেন। স্বদেশে তার বিরুদ্ধে দাঙ্গায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগের তদন্ত চলছে। এর কিছুদিন আগেই অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন ৬৭ বছর বয়সী এ নেতা।
আরও পড়ুন>> ভোটে হারার পর থেকে মুখ বন্ধ ‘ব্রাজিলের ডোনাল্ড ট্রাম্পের’
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো। ছবি সংগৃহীত
ব্রাজিলের রাজকীয় প্রেসিডেন্ট প্যালেস ছেড়ে এখন ফ্লোরিডায় ডিজনি ওয়ার্ল্ড রিসোর্টের কাছে একটি ছোট্ট কমিউনিটিতে থাকছেন জেইর বোলসোনারো। ওই এলাকার বাড়িগুলোর চেহারা অনেকটা একই রকম দেখতে।
আরও পড়ুন>> কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছিল ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্টের!
যুক্তরাষ্ট্রে গত ছয় সপ্তাহ বেশ নিভৃতে কেটেছে সাবেক ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্টের। বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন ব্রাজিলের সাবেক মার্শাল আর্ট চ্যাম্পিয়ন জোসে আলডোর বাড়িতে। স্থানীয় সুপার মার্কেটে গেছেন একবার। এছাড়া কেএফসি’র একটি রেস্তোরাঁয় একা বসে তার ফ্রাইড চিকেন খাওয়ার দৃশ্যও দেখা গেছে।
আরও পড়ুন>> ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনায় হামলা
যুক্তরাষ্ট্রে সুপারশপে একা একা ঘুরছেন বোলসোনারো। ছবি সংগৃহীত
অবশ্য গত শুক্রবার নীরবতা ভেঙে মিয়ামির কাছে ট্রাম্প ন্যাশনাল হোটেলে প্রায় ৪০০ সমর্থকের সঙ্গে কথা বলেছেন বোলসোনারো। এই অনুষ্ঠানটি আয়োজনে তার পুরোনো মিত্র সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো হাত ছিল কি না তা জানা যায়নি।
ভবিষ্যৎ কী?
এই মুহূর্তে বোলসোনারোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতই বলা যায়। এর আগে তিনি প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, জানুয়ারির শেষের দিকে ব্রাজিলে ফেরার ইচ্ছা রয়েছে। তবে এ সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে আরও ছয় মাস থাকার জন্য নতুন ভিসার আবেদন করেছেন বোলসোনারো।
আরও পড়ুন>> ব্রাজিলে দাঙ্গা: বোলসোনারোর ভূমিকা তদন্ত করবে উচ্চ আদালত
ন্যাশনাল কংগ্রেসে বোলসোনারো সমর্থকদের তাণ্ডব। ছবি সংগৃহীত
তাছাড়া সাবেক প্রেসিডেন্টের অন্যতম পুত্র ব্রাজিলিয়ান সিনেটর ফ্লাভিও বোলসোনারো গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, তার বাবার স্বদেশে ফেরার দিন ঠিক নেই। তিনি বলেন, হতে পারে আগামীকাল, অথবা ছয় মাস পরে, অথবা হতে পারে তিনি কখনো ফিরলেনই না।
আরও পড়ুন>> ব্রাজিলের নিরাপত্তা বাহিনীতে বোলসোনারো অনুগতদের বাদ দেবেন লুলা
যদিও গত মঙ্গলবার অরলান্ডো রেস্টুরেস্টে সমর্থকদের সামনে বোলসোনারো জানিয়েছেন, তিনি ব্রাজিলের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবেন। তবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেননি তিনি।
এখন দেখার বিষয়, যুক্তরাষ্ট্রে বোলসোনারো নিভৃত জীবন বেছে নেন নাকি অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করেন।
শুক্রবারের অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, আমি সবসময়ই মার্কিন জনগণের বিশাল ভক্ত- তাদের স্বাধীনতা, তাদের দেশপ্রেম এবং পতাকার প্রতি তাদের ভালোবাসা।
আরও পড়ুন>> ব্রাজিলে কতটা পরিবর্তন আনবে লুলার বিজয়?
সূত্র: এএফপি
কেএএ/