বিমানবন্দরে বসবাস করা সিরিয়ান শরণার্থী পেলেন কানাডার নাগরিকত্ব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১২ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২৩
হাসান আল কনতার /ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে বসবাস করা হাসান আল কনতার নামে এক সিরীয় শরণার্থী অবশেষে কানাডার নাগরিকত্ব পেয়েছেন। বুধবার (১১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (১১ জানুয়ারি) সিরীয় শরণার্থী হাসান আল কনতারের (৪১) জন্য একটি স্মরণীয় দিন। মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে সাত মাস আটকে থাকাসহ দীর্ঘদিন অনিশ্চিত জীবনযাপনের পর কানাডার নাগরিক হয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন>> ‘আমরা সিরিয়া থেকে এসেছি, একটু সহযোগিতা করুন’

নাগরিকত্বের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে কনতার আল-জাজিরাকে বলেন, এত বছর পর এমন অর্জন আমার কাছে বিশাল বিজয়ের মতো। আমি এখন নিজের একটি দেশ পেয়েছি। শেষ পর্যন্ত মাথা গোঁজার ঠাই খোঁজার দীর্ঘ লড়াইয়ে মূল্য পেলাম।

‘এই নাগরিকত্ব পেতে আমি আমার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ হারিয়েছি। আমি আমার বাবার জন্য কিছু করতে পারিনি। এমনকি, তিনি মারা যাওয়ার সময় পাশেও থাকতে পারিনি। নিজের ভাইয়ের বিয়ে দেখতে হয়েছে স্কাইপে।’

তিনি আরও বলেন, সমর্থন ও সহায়তা করার পরিবর্তে বিশ্বের বহু দেশ সিরীয় শরণার্থীদের আবদ্ধ করে ফেলছে। দেশগুলো অভিবাসন সংক্রান্ত বিধিনিষেধ বাড়িয়ে আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা সীমার মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে। এতে শরণার্থী সমস্যা বাড়ছে ও অধিকাংশ দেশ তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে।

আরও পড়ুন>> সিরিয়া উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবির ঘটনায় ৬১ জনের প্রাণহানি

‘এমনকি, ডেনমার্কের মতো উন্নত দেশগুলো যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরীয় আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করেছে। অনেক আশ্রয়প্রার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। যাত্রাপথে অনেকেই মারা যান। আবার যারা নিরাপদে ইউরোপে পৌঁছান, তারা অনিশ্চিত জীবনের সামনাসামনি হন।’

আল কনতার বলেন, সিরীয়দের সামনে থেকে সব দরজা এক এক করে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এরপরও আমরা বেঁচে থাকতে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

হাসান আল কনতার ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বগণমাধ্যমের নজরে আসেন। যুদ্ধগ্রস্ত সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসার পর আইনি অভিবাসনের কাগজপত্র না থাকায় কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে পড়েন তিনি।

বৈধতা না থাকা সেসময় তার জন্য মালয়েশিয়া ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে দেওয়া তার পোস্টগুলো সারাবিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। অধিকাংশ মানুষ তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন>>কোন দেশের কত আশ্রয় আবেদন জমা

২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদবিরোধী বিক্ষোভের বিরুদ্ধে সরকার প্রাণঘাতী ব্যবস্থা নেওয়ার পর সিরিয়ায় সংঘাতের সূচনা হয়। তারপর থেকেই দেশটিতে টানা গৃহযুদ্ধ চলছে।

জাতিসংঘ বলছে, গত এক দশকে সিরিয়ায় সাড়ে তিন লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন ও ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুতদের মধ্য থেকে ৬৬ লাখেরও বেশি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন, যাদের অনেকেই বিভিন্ন দেশের শরণার্থী শিবিরে আটকে আছেন ও আইনি জটিলতায় ভুগছেন।

সূত্র: আল-জাজিরা

এসএএইচ/কেএএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।