মৃত স্ত্রীর সিলিকনের মূর্তি তৈরি করলেন স্বামী
ধৃমল দত্ত, কলকাতা: করোনায় স্ত্রী ইন্দ্রানীর সান্দিল্যকে হারান পশ্চিমবঙ্গের ৬৫ বছর বয়সী সাবেক সরকারি কর্মকর্তা তাপস সান্দিল্য। স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসতেন তাপস। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে সিলিকনের মূর্তি তৈরি করেছেন তিনি। মূর্তিটি দেখতে হুবহু ইন্দ্রানীর সান্দিল্যর মতো। এতে খরচ হয়েছে আড়াই লাখ রুপি।
কলকাতার ভিআইপি রোডে তাদের বাসায় ইন্দ্রানীর প্রিয় স্থানে একটি সোফার ওপর মূর্তিটি বসানো হয়েছে। প্রতিবেশীরা প্রায়ই ইন্দ্রানীর সিলিকনের মূর্তিটি দেখতে ভিড় করছেন।
জানা যায়, ইন্দ্রানীর মৃত্যুর পর তাপস ইন্টারনেটে এমন একজনের সন্ধান শুরু করেন যিনি তার স্ত্রীর মূর্তি তৈরি করতে পারবেন। ২০২২ সালে সুবিমল দাস (৪৬) নামে একজন ভাস্কর্য শিল্পীকে খুঁজে পান তাপস। যিনি সাধারণত জাদুঘরের জন্য সিলিকন প্রতিলিপি তৈরি করেন। প্রথমে সুবিমল দাস ইন্দ্রানীর মুখের ছবি সংগ্রহ করে একটি মাটির মূর্তি তৈরি করেন। এরপর ফাইবার ছাঁচনির্মাণ ও সিলিকন ঢালাইয়ে তৈরি করা হয় ইন্দ্রানীর মূর্তি। এটির ওজন প্রায় ৩০ কেজি।
তাপস সান্দিল্য বলেন, আমি আমার স্ত্রীর চিরস্থায়ী ইচ্ছা পূরণ করছি। অন্যদের কাছে এটি মূর্খতা মনে হতে পারে, কিন্তু আমার সঙ্গে আমার স্ত্রী চিরস্থায়ী থেকে যাবে। আমার স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থায় আমরা নদীয়ার মায়াপুর ইসকন মন্দিরে গিয়েছিলাম। সেখানে ভক্তিবেদান্ত স্বামীর প্রাণবন্ত মূর্তি দেখে ইন্দ্রানীর আমাকে বলেছিলেন, তিনি যদি আমার আগে মারা যায় তবে তার একই রকম মূর্তির তৈরি করার জন্য। পরিবারে অনেকেই এর বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু আমি কারও কথাই শুনিনি।
তিনি বলেন, আমি ৩৯ বছর ইন্দ্রানীর সঙ্গে সংসার করেছি। আমি দেখেছি উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলার বারাসাতের এক দর্জির কাছ থেকে আমার স্ত্রী সবসময় জামা-কাপড় তৈরি করতো। সেই দর্জি আমার স্ত্রীর সঠিক পরিমাপ জানতো। তার কাছ থেকেই এই মূর্তির নিখুঁত ফিট জামা-কাপড় তৈরি করা হয়েছে। আমার স্ত্রী ২০২১ সালের ৪ মে মারা যায়।
আরএডি