টাকার জোরে বন্ধু বাড়াচ্ছে কাতার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৫০ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২২
ছবি: সংগৃহীত

কয়েক বছর ধরে উদার পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বন্ধু বাড়িয়ে চলেছে কাতার। আর তার জন্য ফ্যাশন, শিল্প, ক্রীড়া থেকে শুরু করে নানা খাতে কোটি কোটি টাকা ঢালছে দেশটি।

বিশ্বকাপ শুরুর কিছুদিন আগেই কাতারে বড় বড় ফ্যাশন ব্রান্ডের এক প্রদর্শনীতে হাজির হয়েছিলেন সাবেক সুপারমডেল নাওমি ক্যাম্পবেল। সেখানে ছিল বিখ্যাত ইতালীয় ব্র্যান্ড ভ্যালেন্টিনোও। ইভেন্টটি সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। তবে অনেকেই যেটা খেয়াল করেননি তা হচ্ছে, ভ্যালেন্টিনোর মালিক কিন্তু কাতার। ২০১২ সালে আর্থিক সংকটে পড়া ব্র্যান্ডটি কিনে নিয়েছিল কাতারি ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড মেইহুলা।

jagonews24

নাওমি ক্যাম্পবেল কাতার গিয়েছিলেন এমার্জ নামে একটি ফ্যাশন চ্যারিটির উদ্বোধন করতে। ধারণা করা হয়, এমার্জ হচ্ছে ক্যাম্পবেলের আরেকটি সংস্থার শাখা যেটির অর্থের উৎস ও খরচের পার্থক্য নিয়ে তদন্ত করছে ব্রিটিশ চ্যারিটি কমিশন। এতে কাতারের যোগসূত্র রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শুধু নাওমির সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কই নয়, গত কয়েক বছরে ইউরোপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, এমনকি ফুটবল ক্লাবও কিনে নিয়েছে কাতার। এজন্য যখন যেখানে যত টাকা প্রয়োজন হয়েছে খরচ করেছে। বিনিয়োগ করেছে ইউরোপের বিভিন্ন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমানবন্দরসহ নানা খাতে।

 jagonews24

শক্তির উৎস প্রাকৃতিক গ্যাস
গত শতকের সত্তরের দশকে বিপুল প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার পর রাতারাতি বিশ্বের অন্যতম গরিব দেশ থেকে ধনী দেশে পরিণত হয় কাতার। ছোট্ট উপসাগরীয় দেশটির ৩০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কাতারি নাগরিক। বাকিরা সবাই বিদেশি কর্মী। মূলত ২০০৯ সাল থেকে কাতার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেকে শক্তিশীল করতে বিপুল বিনিয়োগ শুরু করে।

কেন এত বিনিয়োগ?
এর কারণ মূলত দুটি৷ প্রথমত, কাতারের দুই প্রতিবেশী হচ্ছে শক্তিশালী এবং বড় রাষ্ট্র সৌদি আরব ও ইরান। তাদের সঙ্গে লড়াইয়ের মতো সামরিক ক্ষমতা কাতারের নেই। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শক্তিশালী বন্ধু থাকলে এক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাড়ে।

দ্বিতীয়ত, ভবিষ্যতে যখন গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে, তখন এই বিনিয়োগ দিয়েই নিজেদের নিরাপদ রাখতে চায় দেশটি।

jagonews24

অবৈধ নয়, ঘাটতি স্বচ্ছতায়
কাতার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করে অবৈধ কিছু করছে না। পররাষ্ট্রনীতি শক্তিশালী করতে বড় বড় রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব করাটা এখন একপ্রকার রীতিতে পরিণত হয়েছে। অনেক দেশই তা করছে। কিন্তু কাতারের ক্ষেত্রে সমস্যা হলো, দেশটির এসব বিনিয়োগে স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে। নিজ দেশের নাগরিক বা সাংবাদিকদের এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানায় না দেশটি।

সদ্যসমাপ্ত বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে সুনাম এবং দুর্নাম দুটিই কুড়িয়েছে কাতার। ধারণা করা হয়, এই আয়োজনের পেছনে ২০ হাজার কোটি ডলারের বেশি খরচ করেছে দেশটি। বিশ্বকাপ দিয়ে দর্শকদের হৃদয় কেড়ে নিলেও শ্রমিকদের নিরাপত্তাহীনতা, আয়োজক হতে ঘুস প্রদানের অভিযোগসহ নানা কারণে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কাতারকে।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।