হিজাব ছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ায় ভাঙা হলো ইরানি খেলোয়াড়ের বাড়ি
এ বছরের অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়ায় আয়োজিত রক ক্লাইম্বিং প্রতিযোগিতায় হিজাব না পরে চুল খোলা রেখেই অংশ নেন এলনাজ রেকাবি। সে অপরাধে তার পারিবারিক বাড়ি ভেঙে দিয়েছে ইরান সরকার। রোববার (৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চলতি সপ্তাহে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে মাটিতে খেলাধুলার মেডেল পড়ে থাকাসহ বাড়ির ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া ওই ভিডিওতে এলনাজের ভাই ও ইরানের অন্যতম শীর্ষ ক্রীড়াবিদ দাউদকে কাঁদতে দেখা যায়। যদিও ফুটেজটি আসলে কখন ধারণ করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।
অবশ্য ইরানের আধা-সরকারি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিশ্চিত করেছে, ওই বাড়িটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, নির্মাণের জন্য এলনাজের পরিবারের বৈধ অনুমতি না থাকায় সেটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
এদিকে, ইরানের সরকারবিরোধীরা এটিকে এলনাজের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক কর্মকাণ্ড বলে দাবি করে ব্যাপক নিন্দা করেছেন। তাদের দাবি, চলমান বিক্ষোভ ঠেকাতে আন্দোলনকারীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালাচ্ছে রাইসি প্রশাসন।
মাশা আমিনির (২২) মৃত্যু নিয়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ইরানে হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। এতে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সমর্থন জানিয়েছেন দেশটির একাধিক খেলোয়াড়, অভিনেতা ও অন্য তারকারা।
অনেকের দাবি, বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন হিসেবেই এলনাজ হিজাব ছাড়াই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এতে হিজাবের বিরোধিতাকারী হিসেবে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে এলনাজের জনপ্রিয়তা ব্যাপক বৃদ্ধি পায়।
তাছাড়া নেট দুনিয়ার ছড়িয়ে পড়া এলনাজের চুলখোলা ছবিগুলো ইরানে চলমান বিক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে দেয়। রেকাবিকে সেসময় আন্দোলনকারীরা ‘নায়ক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।
ইরানের বাধ্যতামূলক আইন অনুযায়ী, নারীদের চুল স্কার্ফ বা হিজাব দিয়ে রাখতে হবে। তাছাড়া পুরো শরীর ঢিলেঢালা পোশাক দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। এমনকি নারী ক্রীড়াবিদরা যখন কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেশের বাইরে যান, তখনও এ আইন মেনে চলতে হয়।
এসএএইচ