ব্রাজিলে দেখার মতো কী কী রয়েছে?
দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম দেশ ব্রাজিল। মহাদেশটির প্রায় অর্ধেকজুড়ে এর অবস্থান। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন অ্যামাজনের অবস্থানও ব্রাজিলে। ফলে দেশটিতে রয়েছে জীববৈচিত্রের অফুরন্ত ভাণ্ডার। কিন্তু শুধু বন-জঙ্গল আর বন্যপ্রাণীই নয়, দর্শনীয় জায়গা বা স্থাপনারও অভাব নেই সাম্বা নাচের দেশ ব্রাজিলে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ব্রাজিলের সেরা দর্শনীয় স্থান কী কী-
১. ক্রাইস্ট দি রিডিমার
পাহাড়ের চূড়ায় ২৮ মিটার চওড়া দুহাত তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রকাণ্ড এক মানবভাস্কর্য। এটিই সেই বিখ্যাত ক্রাইস্ট দি রিডিমার। রিও ডি জেনিরোর তিজুকা ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত ৭০৯ মিটার দীর্ঘ ভাস্কর্যটি। ব্রাজিলের প্রতীকী চিহ্ন হয়ে ওঠা ক্রাইস্ট দি রিডিমার ব্রাজিলের অন্যতম শীর্ষ ভ্রমণ গন্তব্য।
২. সুগার লোফ
রিও ডি জেনিরোর বৃত্তাকার শৈল চূড়াটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। সমুদ্র সৈকত থেকে এর উচ্চতা প্রায় ৩৯৪ মিটার। রিও শহর দেখার জন্য এবং সুগার লোফ ও মরো দা উরকার মধ্যে ঝুলন্ত ক্যাবল কার রাইডিংয়ের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার জন্য প্রতি বছর বহু দর্শনার্থী ছুটে যান সেখানে।
৩. ইগুয়াজু জলপ্রপাত
ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ে- এই তিন দেশের সীমান্তের সংযোগস্থলে ২৪৭টি জলপ্রপাত বেয়ে পড়ছে ইগুয়াকু নদীর পানি। অর্ধ-বৃত্তাকারে নেমে আসা এসব জলপ্রপাতের শব্দ ও প্রাকৃতিক দৃশ্য মুগ্ধ করবে সবাইকে। ইগুয়াজুর কিছু কিছু জলপ্রপাতের উচ্চতা ১০০ মিটার পর্যন্ত।
৪. কোপাকাবানা
রিওর আরেকটি বিখ্যাত জায়গা হলো কোপাকাবানা। এখানে রয়েছে প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ সাদা বালির সৈকত। একপাশে থাকা ভবনগুলোর থেকে সৈকতকে আলাদা করেছে সাদা-কালো মোজাইকের দৃষ্টিনন্দন রাস্তা। এটি দেখলে পর্তুগালের লিসবন শহরের কথা মনে হতে বাধ্য।
৫. সালভাদর
বাহিয়া রাজ্যের রাজধানী শহরটি ব্রাজিলিয়ান সংস্কৃতিরও কেন্দ্রবিন্দু। এখানে দেখা মিলবে বহু ঐতিহ্য, খাবার ও সংগীতের। সালভাদর এর সৈকতগুলোর জন্যেও বেশ প্রসিদ্ধ।
৬. ওইরো প্রেতো
ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়া ব্রাজিলের প্রথম জায়গা এটি। দেশটির সেরা সংরক্ষিত ঔপনিবেশিক শহর ওইরো প্রেতো। বেশ কয়েকটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এখানে।
৭. লেনকয়েস মারানহেনসেস ন্যাশনাল পার্ক
জানেন তো, ব্রাজিলে মরুভূমিও রয়েছে। সেটি ঘিরেই মূলত গড়ে উঠেছে লেনকয়েস মারানহেনসেস ন্যাশনাল পার্ক। বিস্তৃত বালিয়াড়ি সমৃদ্ধ এলাকাটি সংরক্ষিত। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি জমে ছোট ছোট হ্রদ তৈরি হয় এখানে। আর তার টানে ছুটে আসেন বহু পর্যটক।
৮. ফার্নান্দো ডি নরোনহা
ব্রাজিলের সবচেয়ে সুন্দর দ্বীপ বলা হয় এটিকে। দেশটির যে কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, কোথায় যেতে চান, তাহলে নরোনহার নাম শোনার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। তীর থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দ্বীপটিতে রয়েছে সামুদ্রিক জীববৈচিত্রের অনন্য সম্ভার। সাগরে ঝাপ দেওয়া, ডলফিন ও কচ্ছপ দেখার সুযোগ- এসবই মিলবে সুন্দর এই দ্বীপে।
৯. প্যান্টানাল
যারা ব্রাজিলের প্রাণীবৈচিত্র্য দেখতে চান, তারা প্যান্টানালে যেতে চাইবেন। এলাকাটি পর্তুগালের চেয়েও বড় এবং ব্রাজিলের বৃহত্তম জলাভূমি সমৃদ্ধ। চিতাবাঘ থেকে শুরু করে কায়মান পর্যন্ত নানা ধরনের বৈচিত্র্যময় প্রাণী, ইকো-ট্যুরিজম ও প্রকৃতির টানে বহু পর্যটক প্রতি বছর ছুটে যান প্যান্টানালে।
১০. চাপাডা ডায়মান্টিনা ন্যাশনাল পার্ক
ব্রাজিলের আরেকটি জনপ্রিয় ইকো-ট্যুরিজম গন্তব্য হলো চাপাডা ডায়ম্যান্টিনা ন্যাশনাল পার্ক। এটি বাহিয়া রাজ্যের মধ্যভাগে অবস্থিত। এলাকাটি বেশ কয়েকটি নদীর উৎস এবং এখানে হাইকিং ও সাঁতার কাটার সুযোগ রয়েছে। সবচেয়ে বিখ্যাত হলো ৩৮০ মিটার উচ্চতার ভেউ ডি নয়ভা জলপ্রপাত।
সূত্র: প্ল্যানেটওয়্যার, ট্রাভেল উইথ পেদ্রো
কেএএ/