রোনালদোর চেয়ে ৯ গুণ ধনী পর্তুগালের যে পরিবার
ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশ পর্তুগাল। ফুটবলপ্রেমীদের কাছে এটি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দেশ বলেই পরিচিত। তিনি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম ধনী ক্রীড়াবিদ। তবে পর্তুগালে এমন একটি পরিবার রয়েছে, যা এ তারকা ফুটবলারের চেয়ে অন্তত নয়গুণ বেশি ধনী। সেটি হলো প্রয়াত ব্যবসায়ী আমেরিকো আমোরিমের পরিবার।
রোনালদোর সম্পদ কত?
এই মুহূর্তে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কোনো ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিতে নেই। কিছুদিন আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন তিনি। তবে ২০২১ সালে সাপ্তাহিক ৫ লাখ ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা প্রায়) মূল বেতনে ইংলিশ ক্লাবটিতে ফিরেছিলেন রোনালদো।
মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরে থেকে পর্তুগিজ তারকার আয় আরও বেশি, প্রায় ছয় কোটি ডলার। এর পেছনে বড় অবদান স্পোর্টস ব্র্যান্ড নাইকির সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের আজীবন চুক্তি। সংক্ষিপ্ত চুক্তি রয়েছে হারবালাইফ, ট্যাগ হিউয়ার, ক্লিয়ারের মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গেও।
ফোর্বসের হিসাবে, রোনালদো সারাজীবনে মোটমাট ১২৪ কোটি ডলার আয় করেছেন। তবে ধনীদের সম্পত্তির হিসাব বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েলদি গরিলার তথ্যমতে, বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি ডলার।
পর্তুগালের শীর্ষ ধনী কারা
পর্তুগালের শীর্ষ ধনী এবং মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সে জায়গা পাওয়া একমাত্র পর্তুগিজ মারিয়া ফার্নান্দা আমোরিম ও তার পরিবার।
মারিয়া প্রয়াত ব্যবসায়ী আমেরিকো আমোরিমের স্ত্রী। আমেরিকো ২০১৭ সালের জুলাই মাসে মারা যান। মৃত্যুর পর তার সব সম্পত্তির মালিক হয়েছেন স্ত্রী ও তিন কন্যা।
পর্তুগালের সবচেয়ে ধনী পরিবারের গল্পের শুরুটা প্রায় দেড়শ বছর আগে। ১৮৭০ সালে ‘কর্টিসিরা আমোরিম’ নামে একটি কর্ক প্রস্তুতকারক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আমেরিকোর দাদা। উত্তরাধিকার সূত্রে একপর্যায়ে এর মালিক হন আমেরিকো।
টানা ছয় দশক তিনি এ কোম্পানিতে নিজের শ্রম দিয়েছেন। আমেরিকোর নেতৃত্বে ‘কর্টিসিরা আমোরিম’ হয়ে উঠেছে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম কর্ক প্রস্তুতকারক। কেউ কেউ তাকে বিশ্বের শীর্ষ কর্ক ব্যবসায়ীও বলে থাকেন।
কর্কের পাশাপাশি অর্থ ও জ্বালানি ব্যবসাতেও আগ্রহ ছিল আমেরিকো আমোরিমের। ২০০৫ সালে ইজাবেল দস সান্তোসের সঙ্গে অ্যাঙ্গোলার ব্যাঙ্কো ইন্টারন্যাসিওনাল ডি ক্রেডিটো (বিআইসি) প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তবে ২০১৪ সালে ব্যাংকটিতে নিজের সব শেয়ার ইজাবেলের কাছে বিক্রি করে দেন এ ব্যবসায়ী।
আরও পড়ুন>> পর্তুগাল থেকে হঠাৎ দেশে ফিরতে মরিয়া ব্রাজিলিয়ানরা
আমেরিকোর বৃহত্তম বিনিয়োগ হলো পর্তুগিজ তেল-গ্যাস কোম্পানি গাল্প এনার্জিয়ার ১৮ শতাংশ শেয়ার। তিনি ২০১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। পরে এই দায়িত্ব বড় মেয়ে পাউলার হাতে তুলে দেন।
জীবদ্দশায় পর্তুগালের গ্রিজো শহরে সপরিবারে থাকতেন আমেরিকো। তার মৃত্যুর পর তার সব সম্পত্তি স্ত্রী মারিয়া ও পাউলাসহ তিন কন্যার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
ফোর্বসের হিসাবে, এই মুহূর্তে আমোরিম পরিবারের মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৫০ কোটি ডলার; অর্থাৎ, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর আনুমানিক সম্পদের চেয়ে প্রায় নয়গুণ বেশি।
আরও পড়ুন>> আর্জেন্টিনার শীর্ষ ধনীদের মধ্যে মেসি নেই কেন?
আরও পড়ুন>> ব্রাজিলের শীর্ষ ধনী কারা, কত সম্পদের মালিক?
আরও পড়ুন>> বিশ্বকাপের আয়োজক কাতারের শীর্ষ ধনী কে?
সূত্র: ফোর্বস, উইকিপিডিয়া, ওয়েলদি গরিলা, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
কেএএ/