ভূমিকম্পের দু’দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত শিশু উদ্ধার
ইন্দোনেশিয়ায় প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের দুদিন পর ধসে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ছয় বছরের এক শিশুকে। সে একটি ম্যাট্রেসের কারণে বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
খবরে বলা হয়েছে, শিশুটির নাম আজকা মাওলানা মালিক। গত বুধবার (২৩ নভেম্বর) সিয়ানজুরে বিধ্বস্ত বাড়ির ভেতর থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে তাকে। এসময় তার পাশেই পড়েছিল দাদির মরদেহ।
স্থানীয় দমকল বিভাগের শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারের সময় বেশ শান্ত ছিল শিশুটি। তাকে নিরাপদেই বের করে নিয়ে আসেন উদ্ধারকারীরা।
সালমান আলফারিসি নামে এক আত্মীয় বলেছেন, (আজকা) এখন ভালো আছে, সে আহত নয়। ডাক্তার বলেছেন, ক্ষুধার্ত হওয়ার কারণেই সে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
ওই ভূমিকম্পে আজকার মা-ও মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন সালমান। তিনি বলেন, সে এখন বাড়ি যেতে চায়। ঘুমের মধ্যে বারবার মাকে খুঁজছে (আজকা)।
গত সোমবার (২১ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ২১ মিনিটে ইন্দোনেশিয়ায় আঘাত হানে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূকম্পন। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্যমতে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল সিয়ানজুর এলাকা থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানা ভূমিকম্পটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭১ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন দুই হাজারের বেশি মানুষ। তবে প্রত্যন্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ বাকি থাকা এবং প্রবল বৃষ্টিতে অভিযানে বিলম্ব হওয়ায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভূমিকম্পের পর থেকে অন্তত ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
২০১৮ সালের পর থেকে ইন্দোনেশিয়ায় এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প। ওই বছর পালু শহরে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার প্রলয়ংকরী এক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল, যার জেরে সুনামি ও ভয়াবহ ভূমিধস দেখা দেয়। সেদিন প্রাণ হারান চার হাজারের বেশি মানুষ।
Indonesia boy, 6, rescued from quake rubble after two days.
— AFP News Agency (@AFP) November 24, 2022
The dramatic rescue has revived hopes that survivors could still be pulled alive from the wreckage days after the strong tremor killed at least 271 peoplehttps://t.co/mmoTOTVZKZ pic.twitter.com/VWAhfVINAw
তথাকথিত ‘প্যাসিফিক রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থানের কারণে ইন্দোনেশিয়া অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ একটি দেশ। গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সুমাত্রা দ্বীপে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ১০ জন।
গত আগস্টের শেষের দিকে মাত্র দুদিনে তিনবার ভূমিকম্পে কাঁপে দ্বীপটি। গত ২৯ আগস্ট সুমাত্রায় আঘাত হানে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প। এর কয়েক ঘণ্টা আগে সেখানে আঘাত হানে ৫ দশমিক ২ মাত্রা ও ৫ দশমিক ৪ মাত্রার আরও দুটি ভূমিকম্প।
গত ২২ আগস্ট ইন্দোনেশিয়ার ডেনপাসার এলাকায় আঘাত হেনেছিল ৫ দশমিক ৫ মাত্রার এক ভূমিকম্প। এর পরেরদিন সুমাত্রা দ্বীপে আঘাত হানে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প।
২০০৯ সালে ইন্দোনেশিয়ার পাডাং এলাকায় ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ১ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
কেএএ/