ঘুরে দাঁড়াবে আর্জেন্টিনা, প্রত্যাশা কলকাতার মেসি ভক্তদের
ধৃমল দত্ত, কলকাতা
এবারই প্রথম নয়, এরআগেও একাধিকবার বিশ্বকাপ প্রথম ম্যাচেই হেরে শুরু করেছে আর্জেন্টিনা। একবার ফাইনালেও খেলেছেন তারা। তবে, এবারের কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা খেলতে গেছে টানা ৩৬ ম্যাচে অপরাজিত থেকে। তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স, খেলোয়াড়দের ফর্ম, দেড় বছর আগে কোপা আমেরিকা জয়ের গৌরব, আর্জেন্টিনাকে এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিটের তকমা দিচ্ছে। কোচ লিওনেল স্কালোনির পরিকল্পনায় আবেগ নয়, যুক্তিযুক্ত কারণেই মনে হচ্ছে, বিশ্বকাপটা এবার জিততে পারে লিওনেল মেসির দল।
কিন্তু কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে টানা ৩৬ ম্যাচে অপরাজিত থাকার চিত্র দেখাতে পারেননি লিওনেল মেসির দল। সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে টপ ফেবারিটদের অন্যতম আর্জেন্টিনা। এতেই মন ভেঙেছে কলকাতার আর্জেন্টিনা সমর্থকদের। প্রথম ম্যাচে জিতে কাতার বিশ্বকাপ শুরু করবে এমনটাই প্রত্যাশা করেছিলেন কলকাতার সমর্থকরা। তবে, কলকাতার মেসি ভক্তদের প্রত্যাশা পরের ম্যাচগুলোতে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াবে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপও জিতবেন তারা।
এদিন ম্যাচের প্রথমার্ধের ১০ মিনিটের মাথায় সৌদি আরবের বিপক্ষে পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ভিএআর চেক করে আর্জেন্টিনাকে পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পট কিক নেন লিওনেল মেসি। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে সহজেই বলটি সৌদি আরবের জালে জড়িয়ে যায়। মেসির পেনাল্টিতে লিড পায় আর্জেন্টিনা। যদিও প্রথমার্ধে মোট চার গোল করে আর্জেন্টিনা, কিন্তু অফসাইডের কারণে তিনটিই বাতিল হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ৪৮-৫৩ এই মাত্র ৫ মিনিটের সৌদি আরবের দুটি আক্রমণে তছনছ হয়ে যায় আর্জেন্টিনার ডিফেন্স। এ দুটি আক্রমণ থেকেই ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা অঘটন ঘটে। দুটি গোল হজম করতে হয় লিওনেল স্কালোনির শিষ্যদের।
পরপর দুটি গোল করে ম্যাচে আধিপত্য নেয় সৌদি আরব। এরপর শতচেষ্টা করেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি আর্জেন্টিনার। টানা ৩৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ জেতার রেকর্ড রয়েছে ইতালির দখলে। ইতালির সেই রেকর্ড ছোঁয়ার সুযোগ ছিল ৩৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচজয়ী আর্জেন্টিনার। কিন্তু সৌদি আরবের কাছে হেরে সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেলো মেসিরদের।
শুধু তাই নয়, আর্জেন্টিনার হারের পর যেমন আচমকা আঁধার নামে কাতারের লুইসেল স্টেডিয়ামে। তেমনি প্রিয় দলের এমন হার দেখে হতাশ কলকাতার মেসি ভক্তরাও। আর্জেন্টিনাকে যে এভাবে প্রথম ম্যাচেই প্রতিপক্ষের কাছে হারতে হবে, তা হয়তো কল্পনাও করতে পারেনি সাদা-নীল দলের ভক্তরা। কাতারের লুইসেল স্টেডিয়াম থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে কলকাতায় টিভির পর্দায় যারা চোখ রেখেছিলেন সবাই হতাশ হয়েছেন।
এদিন কলকাতার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় শুরু হয় এ ম্যাচ। অনেকেই এদিন সকাল সকাল বাইরের কাজ শেষ করে বাড়িতে টিভির সামনে বসে যান। মঙ্গলবার বিকেল ৩টার পর কলকাতার রাস্তায় তেমন যানজট চোখে পরেনি। অনেকেই আবার অফিসে বসে প্রিয় দলের খেলা দেখেছেন।
রাস্তার মোড়গুলোতেও টাঙানো ছিল নীল-দাদা পতাকা। এদিন দুপুরে খেলা শুরুর আগে ঢাক-ঢোল, বাদ্যের বাজনা বাজিয়ে মেতে ওঠেন কলকাতার আর্জেন্টিনা ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা। কিন্তু খেলা শেষে তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ভেঙে যায়। তবে, কলকাতার মেসি ভক্তদের আশা পরের ম্যাচগুলোতে মেক্সিকো ও পোল্যান্ডকে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে আর্জেন্টিনা এবং বিশ্বকাপ জিতবে।
এমএএইচ/এমএস