পশ্চিমবঙ্গে গরীব ও বঞ্চিতদের সিংহভাগই মুসলিম : অমর্ত্য সেন


প্রকাশিত: ১০:৩১ এএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

পশ্চিমবঙ্গে দরিদ্র এবং বঞ্চিত মানুষের সিংহভাগই মুসলিম। অন্যান্যদের তুলনায় বাঙালি মুসলিমরা অনেক ক্ষেত্রেই বঞ্চিত হচ্ছেন। রোববার বাঙালি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন `পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদের জীবনের বাস্তবতা : একটি প্রতিবেদন` প্রকাশের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

অ্যাসোসিয়েশন স্ন্যাপ, গাইডেন্স গিল্ড এবং প্রতীচী ইনস্টিটিউটের তৈরি ওই প্রতিবেদন গোর্কি সদনে প্রকাশ করা হয়। এ সময় অমর্ত্য সেন বলেন, ওই প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের দরিদ্র এবং বঞ্চিত মানুষের সিংহভাগই মুসলিম। বাঙালি মুসলিমদের যে কতটা বঞ্চনা সহ্য করতে হয়, তা কেবল বহু মাত্রিক পাঠের মাধ্যমেই বোঝা সম্ভব। জীবনের মানের নিরিখে তারা অসামঞ্জস্যভাবে দরিদ্র এবং বঞ্চিত।

আর্থিক বা ধর্মীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে যারা উচ্চ শ্রেণিতে থাকতে পারেন, তাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হলে ভূমিহীন, শিক্ষাগতভাবে পিছিয়ে পড়া এবং গরিব মুসলিমদের বিশেষ উপকার হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাঙালি এই নোবেলজয়ী বলেন, অতীতের প্রেক্ষিতে বর্তমানের বঞ্চনাকে বোঝার ক্ষেত্রে একটি অঞ্চলের ইতিহাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গের বঞ্চিত মুসলিমদের বর্তমান অবস্থা জমি সম্পর্ক, সামাজিক বাধা, ব্যবসার সুযোগ, সরকারি সাহায্যের ব্যাপ্তি, সীমা এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। অতীতের আলোয় বর্তমানকে বুঝতে হলে ইতিহাসে ভাল দখল থাকা প্রয়োজন।

অমর্ত্য সেনের এসব মন্তব্যের জেরে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু বিত্ত উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ বলেন, ওই সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন আমরা দেখিনি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিঠি লিখে তাদের কাছে ওই প্রতিবেদনের কপি চাইব। কীসের ভিত্তিতে, কীভাবে, কেমন সমীক্ষা করেছেন; দেখব। আর আমাদের সরকার কী কী কাজ সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের জন্য করেছে, তার একটা রিপোর্ট অমর্ত্যবাবুর কাছে পাঠিয়ে দেব।

মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, প্রথম বছরেই সংখ্যালঘু সহ সব ক্ষেত্রেই ৯০ শতাংশ কাজ করা হয়েছে। মমতার দাবি, তিনি যা করেছেন ৪০০ বছরেও কেউ তা করতে পারবে না।

প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানে সাহিত্যিক শঙ্খ ঘোষ বলেন, আমাদের সমাজ জীবনে বিভিন্ন অংশের মধ্যে পারস্পরিক অপরিচয় আছে। তার থেকে আসে অজ্ঞানতা। সেখান থেকে জন্মায় অবিশ্বাস। তার থেকে আসে অসহিষ্ণুতা। সেখান থেকে তৈরি হয় অশান্তি, যা কখনও কখনও দাঙ্গা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। পরস্পরের মধ্যে পরিচয়ই এই সমস্যা ঠেকানোর পথ এবং সেটা সরকারের নয়, সমাজের দায়িত্ব।

এসআইএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।