সতীত্বের বিনিময়ে শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে বিতর্ক
সতীত্ব রাখতে না পারলে কেড়ে নেয়া হবে শিক্ষাবৃত্তি। দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের এমন একটি ঘোষণা নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক শুরু হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন সরকারি এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলছেন, শিক্ষার সুযোগ প্রাপ্তির সঙ্গে যৌনতাকে মিলিয়ে ফেলা ঠিক নয়।
আঠারো বছর বয়সী থুবেলিহলে লোডলো এই বৃত্তি পেয়েছেন। কিন্তু তিনি এটি নিয়ে চিন্তিত; কারণ কেবলমাত্র কুমারীত্ব রক্ষা করলেই এই অর্থ পাবেন তিনি। বিবিসিকে থুবেলিহলে লোডলো জানান, এই শিক্ষার সুযোগ পাওয়ার একমাত্র যোগ্যতা হল আমার কুমারীত্ব ধরে রাখা। কারণ আমার বাবা-মায়ের পক্ষে লেখাপড়ার খরচ চালানো সম্ভব নয়।
এ কারণে নিয়মিত ভার্জিনিটি বা কুমারীত্বের পরীক্ষা দিতে হয়। যদিও এতে কিছু মনে করছে না লেডলো। তিনি জানান, কুমারীত্ব পরীক্ষা তার সংস্কৃতির অংশ। এটা তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন বলে মনে করেন না লেডলো। বরং উল্টো প্রতিবার পরীক্ষার পর গর্ববোধ করেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ছেলেমেয়েদের মিলনের বয়স ১৬ বছর। যদিও সেই বয়স দুবছর আগেই পেরিয়ে এসেছে এলডো। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ সমাপ্তির জন্য এখনো নিজের কুমারিত্ব ধরে রেখেছেন। জুলুর সংস্কৃতিতে কুমারীত্ব পরীক্ষার রীতি সাধারণ একটি ব্যাপার। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই জুলু রাজার রাজকীয় প্রাসাদের বার্ষিক নৃত্যোৎসবে অংশ নিতে পারেন।
তবে এ বিষয়টিতে ভীষণ আপত্তি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর। তাদের বক্তব্য এভাবে শিক্ষার সুযোগ প্রাপ্তির সাথে যৌনতাকে মিলিয়ে ফেলা ঠিক নয়। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ক একটি সংগঠনের কর্মী পালেসা এমপাপা বলছেন, এখানে উদ্বেগজনক দিকটি হচ্ছে, এর মাধ্যমে কেবল মেয়েদের দিকে মনোযোগ দেয়া হচ্ছে যেটি বৈষম্যমূলক। কিন্তু মূল সমস্যা কিশোরী মাতৃত্ব বা এইচআইভি সংক্রমণ যে বাড়ছে সেই সমস্যার দিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, শুধু মেয়েদের দোষারোপ করলেই চলবে না। তবে এই পদ্ধতির প্রবক্তা অর্থাৎ স্থানীয় মেয়র ডুডু মাযিবুকু এমন বক্তব্যের সাথে একেবারেই একমত নন। তিনি বলছেন, এই বৃত্তি কোনও পুরস্কার নয়, কিন্তু একটি মেয়ের জীবনের জন্য এটি একটি আজীবন বিনিয়োগের সমতুল্য। যারা অন্য পথ বেছে নিয়েছে তাদের আমরা নিন্দা করছি না। বরং তাদের জন্য অন্য বৃত্তির ব্যবস্থা আছে।
এসআইএস/পিআর