আবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রতিবাদে গায়ে আগুন দিলেন এক ব্যক্তি
জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া রাষ্ট্রীয়ভাবে আয়োজনের প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছে গায়ে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এক ব্যক্তি। স্থানীয় সময় বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) টোকিওতে এ ঘটনা ঘটে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আগামী সপ্তাহে রাষ্ট্রীয়ভাবে শিনজো আবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করার কথা।
কিয়োডো নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। তবে তিনি সচেতন ছিলেন এবং পুলিশকে জানান গায়ে তেল ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ওই ব্যক্তির লেখা একটি নোটও পাওয়া গেছে, যেখানে বলা হয় যে ‘ব্যক্তিগতভাবে, আমি একেবারেই আবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার বিরুদ্ধে’।
টোকিও ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন যে এক ব্যক্তি টোকিওর কাসুমিগাসেকি জেলায় রাস্তার মধ্যে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন। তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর উল্লেখ করে ওই ব্যক্তির পরিচয়, উদ্দেশ্য বা অন্য কোনো তথ্য দিতে নারাজ টোকিও পুলিশ।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন। তিনি রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনে প্রতিক্রিয়া জানাতে নিরাপত্তা পরিষদের ব্যর্থতার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে মঙ্গলবার একটি বক্তৃতা দিয়েছেন।
শিনজো আবের জন্য পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন জাপানিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করছে।
রাষ্ট্রীয়ভাবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন জাপানে একটি বিরল ঘটনা। তবে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন যে আবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জাপানের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী নেতা এবং তার কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সাফল্যের জন্য এই সম্মানের যোগ্য তিনি।
সমালোচকরা বলছেন, শিনজো আবের প্রতি সহানভূতি দেখিয়ে তার অনুসারীদের সমর্থন লাভ করে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। এ কারণে ১৪০ কোটি ইয়েন খরচ করার কথাও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি যেটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
জাপানের ইতিহাসের পাতায় আগেই জায়গা করে নিয়েছিলেন শিনজো আবে। ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যুদ্ধোত্তর অন্য যেকোনো নেতার চেয়ে বেশি সময় দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। গত ৮ জুলাই নির্বাচনী প্রচারণার অনুষ্ঠানে ঘাতকের গুলিতে প্রাণ হারান ৬৭ বছর বয়সী শিনজো আবে।
আধুনিক জাপানের সবচেয়ে পরিণত রাজনীতিবিদদের একজনের এভাবে মৃত্যু একটি ট্র্যাজেডিও বটে। শিনজো আবের হত্যাকাণ্ড জাপানকে হতবাক করেছে, যেখানে বন্দুক কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত এবং রাজনৈতিক সহিংসতা অত্যন্ত বিরল।
সূত্র: ব্লুমবার্গ
এসএনআর