আর্মেনিয়া সফরে পেলোসি, সংঘর্ষের জন্য আজারবাইজানকে দোষারোপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৪৫ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

সীমান্ত নিয়ে আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার সেনাদের সংঘর্ষের মাঝেই আর্মেনিয়া সফরে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তিনদিনের সফরে মার্কিন স্পিকার গেছেন দেশটিতে। শুধু তাই নয় এই সংঘর্ষের জন্য আজারবাইজানকে দায়ী করেছেন তিনি।

স্থানীয় সময় রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) দেশটি সফরে গিয়ে ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ‘আর্মেনিয়ার সীমান্তে আজারবাইজান অবৈধ ও অন্যায়ভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে’।

যদিও পেলোসির এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আজারবাইজান। তারা বলছে, মার্কিন স্পিকার যে মন্তব্য করেছেন তা ভিত্তিহীন এবং এর প্রমাণ নেই। তিনি একতরফা অভিযোগ শুনে এমন মন্তব্য করেছেন। দেশ দুটির মধ্যে শান্তি প্রচেষ্টার জন্য তার এ বক্তব্য গুরুতর আঘাত বলেও মনে করছে আজারবাইজান।

১৯৯১ সালে আর্মেনিয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম কোনো শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা আর্মেনিয়া সফর করছেন।

আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কালেকটিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশন (সিএসটিও)-এর একটি প্রতিনিধিদল (সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোর মস্কোর নেতৃত্বে গঠিত একটি সংগঠন) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইয়েরেভানে পৌঁছেছে। আর্মেনিয়া এটির সদস্য হলেও আজারবাইজান নয়। সে হিসাবে আর্মেনিয়াকে সামরিকভাবে সাহায্য করার কথা রাশিয়ার। কিন্তু রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে আর্মেনিয়া অসন্তুষ্ট, তা এখন স্পষ্ট হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আর্মেনিয়ায় পেলোসির সফর কূটনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে চলে দু’পক্ষের তুমুল লড়াই। ইয়েরেভান ও বাকু এই সংঘাতের জন্য একে অপরকে দায়ী করছে। গত দুই বছর ধরে দ্বন্দ্বে লিপ্ত দেশ দুটির সেনাবাহিনী। ককেশাসের প্রতিবেশি দেশ দুটির যুদ্ধ শুরু হয় ২০২০ সালে। এর আগে ৯০ এর দশকে যুদ্ধে জড়ায় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া।

দেশ দুটির মধ্যে দ্বন্দ্ব মূলত নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চলকে ঘিরে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সীমানা অনুযায়ী নাগোর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ। তবে সেখানকার বাসিন্দারা জাতিগতভাবে আর্মেনীয়।

উভয়পক্ষ একে অপরকে দুষছে সর্বশেষ সংঘর্ষের জন্য। যদিও আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় গত বৃহস্পতিবার দুপক্ষের লড়াই থামে।

এদিকে, যুদ্ধবিরতির পর আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের নিহত সেনার সংখ্যা ৭১ থেকে বেড়ে ৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে, আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান জানান, এখন পর্যন্ত আর্মেনিয়ার নিহত সেনার সংখ্যা ১৩৫ জন। তবে তিনি মন্ত্রিসভাকে বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটাই চূড়ান্ত সংখ্যা নয়। আরও অনেকে আহত হয়েছেন।

সীমান্ত সংঘাতের জেরে এর আগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে যুদ্ধে জড়ায় দেশ দুটি। সে সময় ছয় সপ্তাহের লড়াইয়ে নিহত হয় প্রায় ৬ হাজার পাঁচশ জন। পরে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।

গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের মধ্যে মধ্যস্থতায় একটি প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করে।

সূত্র: আল-জাজিরা, ডয়েচে ভেলে

এসএনআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।