উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী আত্তীকরণ বিল পাস
আইনের অধীনে জারিকৃত আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আদালতের কাছে প্রশ্ন তোলার এখতিয়ার না দিয়ে ‘উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী আত্তীকরণ আইন, ২০১৬ পাস হয়েছে’। রোববার জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে আইনটি পাস হয়। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক আইনটি পাস করার জন্য সংসদে উত্থাপন করেন।
আইনের উপর বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সদস্যদের আনীত ৮টি সংশোধনী, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। তবে বিলে অর্থ সংশ্লিষ্টতা থাকার পরও রাষ্ট্রপতির অনুমোদন না থাকায় বিলটির বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট প্রদান করে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
আইনে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে সরকারি কর্মচারীদের (ক্যডার-নন ক্যাডার) যে সব পদ সরকার বিলুপ্ত করেছে বা যাদের চাকরি আত্তীকরণের দায়িত্ব সরকার নিয়েছে, তারা এ আইনের সুবিধা পাবেন।
এছাড়া নিউজ পেপার (অ্যানালমেন্ট অব ডিক্লারেশন) অ্যাক্ট, ১৯৭৫-এর অধীন যেসব সংবাদপত্রে নিয়োজিত কর্মচারীর চাকরি বিলুপ্ত হয়েছে, এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে তারাও সরকারি কর্মচারী হিসেবে গণ্য হবেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মনোনীত না করলে কাউকে আত্তীকরণ করা যাবে না। আত্তীকরণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সঙ্গে পরামর্শের প্রয়োজন হবে না। এ আইনের অধীনে কৃত বা জারিকৃত কোনো আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আদালত বা ট্রাইব্যুনাল বা কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না। এছাড়া কেউ একবার আত্তীকরণ সুবিধা ভোগ করলে তিনি পুনঃআত্তীকরণের অধিকার পাবেন না।
আইনে আরো বলা হয়েছে, সরকারের বিধানাবলি দ্বারা এসব আত্তীকৃত সরকারি কর্মচারীদের জ্যেষ্ঠতা, বেতন ও পেনশন ইত্যাদি নির্ধরিত হবে। এসব কর্মচারীদের বেতন নির্ধারিত হবে পদ বিলুপ্ত হওয়ার আগের স্কেলে। তবে উক্ত স্কেলে পদ না থাকলে নিম্ন স্কেলের পদে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হবে। তাতে যোগদানে অস্বীকৃতি জানালে তিনি নির্ধারিত তারিখ হতে অবসরপ্রাপ্ত মর্মে গণ্য হবেন।
সরকারের পূর্ব অনুমোদন ব্যতিত কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ (কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ বা সরকার প্রতিষ্ঠিত কোনো কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান) কর্তৃক সরকারি কর্মচারী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে।
সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক তার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) আইন ১৯৮৬ বাতিল ঘোষিত হওয়ায় অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দ্য সারপ্লাস পাবলিক সার্ভেন্টস অ্যাবজারপশন অর্ডিন্যান্স ১৯৮৫ একই বছরের ২০ মে প্রকাশ করা হয়। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জারিকৃত কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকরণ (বিশেষ বিধান) আইন ২০১৩ প্রণীত হয়েছে।
উক্ত অধ্যাদেশের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করে সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে নতুন আইন আকারে বাংলা ভাষায় প্রণয়ন করার জন্য সরকারি সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে প্রেক্ষিতে আলোচ্য অধ্যাদেশটি বাংলাভাষায় ‘উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারি আত্তীকরণ আইন, ২০১৬’ প্রণয়ন করা হয়।
এইচএস/এসএইচএস/এবিএস