চীনের জিনজিয়াংয়ে খাবার-ওষুধের সংকট
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য চীনের জিনজিয়াং শহরে প্রায় এক মাস ধরে লকডাউন জারি রয়েছে। ফলে সেখানে খাবার এবং ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় সেখানকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চেয়েছে। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
কাজাখস্তানের সীমান্তবর্তী উত্তর জিনজিয়াংয়ের একটি অংশ ইলি। সেখানে খাবার এবং ওষুধের ঘাটতি এবং কঠিন পরিস্থিতির বিষয়টি কয়েকদিন ধরেই চীনের সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব পরিস্থিতি নিয়ে করা কিছু পোস্ট সেন্সরও করা হচ্ছে।
তবে শুক্রবার এই পরিস্থিতির কথা স্বীকার করেছেন কর্মকর্তারা। সংকটে পড়া ওই এলাকার ডেপুটি গভর্নর লিউ কিংহুয়াও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, লকডাউনের কারণে অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারছেন না এবং খাবার বিতরণে সমস্যা হচ্ছে। ফলে কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় লিউ বলেন, মানুষের জীবনে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার প্রভাব ও অসুবিধার জন্য স্থানীয় সরকার গভীরভাবে ক্ষমাপ্রার্থী এবং অবিলম্বে এই সমস্যা সমাধানের অঙ্গীকার করা হয়েছে।
চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি বিশাল অঞ্চলজুড়ে জিনজিয়াংয়ের অবস্থান যেখানে সংখ্যালঘু উইঘুরসহ বেশ কয়েকটি জাতিগত গোষ্ঠীর আবাসস্থল। এই অঞ্চলকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে চীনা কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং ধর্মীয় চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা। যদিও এটি বেশিরভাগ মুসলিম উইঘুর এবং অন্যান্য গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যেই করা হচ্ছে এবং সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে।
কোভিড জিরো পলিসির আওতায় দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্ত বন্ধ করে রেখেছে চীন। তবে অভ্যন্তরীণ পর্যটন গন্তব্য হিসেবে জিনজিয়াংয়ের জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্ত কমেছে। এসময় মৃত্যু হয়েছে ৮১১ জনের। আর করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৬৭০ জন। রোববার সকালে করোনাভাইরাসে শনাক্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার নিয়মিত আপডেট দেওয়া আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগের দিন শনিবার এক হাজার ৬৬৭ জনের মৃত্যু ও চার লাখের বেশি শনাক্তের তথ্য দেওয়া হয়েছিল। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনায় মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ লাখ ১৫ হাজার ৬০৬ জনে। আর শনাক্ত বেড়ে হয়েছে ৬১ কোটি ৩৪ লাখ ১ হাজার ১০৭ জন। এর মধ্যে ৫৯ কোটি ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৮১ জন সুস্থ হয়েছেন।
টিটিএন/জিকেএস