কত ভোটে জিতলেন লিজ ট্রাস?
কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের ভোটে দলীয় প্রধান ও যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাবেক ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাককে বড় ব্যবধানে হারিয়েছেন তিনি। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সময় বেলা সাড়ে ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টা) ঘোষণা করা হয় যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম।
সাধারণ ভোটারদের বদলে এবার নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে বেছে নিয়েছেন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ১ লাখ ৬০ হাজার সদস্য। সবশেষ ১১ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর (এডওয়ার্ড হিথের পর থেকে) মধ্যে সাধারণ নির্বাচনে জয়ী না হয়েই ডাউনিং স্ট্রিটে প্রবেশ করা ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন লিজ ট্রাস।
এদিন ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন কনজারভেটিভ পার্টির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির (১৯২২ কমিটি) চেয়ারম্যান স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডলি। তিনি জানান, নির্বাচনে ভোট পড়েছে প্রায় ৮২ দশমিক ৬ শতাংশ। এতে ৮১ হাজার ৩২৬টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন লিজ ট্রাস। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ঋষি সুনাক পেয়েছেন ৬০ হাজার ৩৯৯ ভোট।
অর্থাৎ ২০ হাজার ৯২৭ ভোটে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাককে হারিয়ে যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন ৪৭ বছর বয়সী লিজ ট্রাস। তিনি হবেন যুক্তরাজ্যের তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মার্গারেট থ্যাচার। তিনি ১৯৭৯ সাল হতে টানা ১১ বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। টেরেজা মে ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন, কিন্তু ব্রেক্সিট নিয়ে তীব্র বিভেদ এবং টানাপোড়েনের মধ্যে তাকে বিদায় নিতে হয়।
এর আগে, নিজ দলের মন্ত্রীদের গণপদত্যাগ ও এমপিদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ জুলাই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টি প্রধান হিসেবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বরিস জনসন। সেদিন ডাউনিং স্ট্রিটে সরকারি বাসভবনের দরজায় দাঁড়িয়ে জনসন জানান, সহকর্মীদের মতামতকে সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। তবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন এ কনজারভেটিভ নেতা।
সোমবার ফল ঘোষণার পরের দিন বিজয়ী নেতার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বরিস জনসন। ক্ষমতার এই হস্তান্তর সাধারণত লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসে হয়ে থাকে। তবে এবার সেটা হবে স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসলে।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ বর্তমানে স্কটল্যান্ডে তার গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটাচ্ছেন। স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় জনসমক্ষে প্রকাশ্যে উপস্থিতিও কমিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাই এই মুহূর্তে লন্ডনে ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই রানির। এ কারণেই ক্ষমতা হস্তান্তরের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যে এবার ব্যতিক্রম হতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিদায়ী বক্তব্য দেবেন বরিস জনসন। এরপর স্কটল্যান্ডে গিয়ে রানিকে তার পদত্যাগের কথা জানাবেন। তারপরেই নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরু করবেন লিজ ট্রাস।
সূত্র: বিবিসি, এনডিটিভি
কেএএ/এমএস
