মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাজা বহাল, যেতে হবে কারাগারে

আহমাদুল কবির
আহমাদুল কবির আহমাদুল কবির , মালয়েশিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৫:৪২ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০২২

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সাজা বহাল রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। দেশটির রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিলের (ওয়ানএমডিবি) অর্থ কেলেঙ্কারির প্রথম মামলায় ২০২০ সালে নাজিব রাজাককে ১২ বছরের কারাদণ্ড ও ২১০ মিলিয়ন রিঙ্গিত জরিমানা করেছিলেন আদালত। এই রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্ট।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) মালয়েশিয়ার সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট বেঞ্চ, হাইকোর্টের রায় সঠিক ছিল বলে সর্বসম্মতভাবে এ ঘোষণা দেন।

ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে আপিলে হারায় নাজিব রাজাকের সাজা শুরু হবে। তিনি কারাগারে থাকবেন।

পাঁচ বিচারকের পক্ষে মালয়েশিয়ার প্রধান বিচারপতি মাইমুন তুনান ম্যাট বলেন, আমরা তার আপিলের কোনো মেরিট পাইনি।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেন নাজিব রাজাক। তার বিরুদ্ধে ১২ বছরের সাজা স্থগিতেরও আবেদন করেন তিনি। তবে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট রায় স্থগিতের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে নাজিব দেশের ইতিহাসে প্রথম প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কারাগারে দণ্ডিত হলেন।

২০০৯ সালে মালয়েশিয়ায় নতুন অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ানএমডিবি) তহবিলটি গঠন করা হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা।

২০১৫ সালে ব্যাংক ও শেয়ার হোল্ডারদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে এই তহবিলের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে, তহবিল থেকে প্রায় চারশ কোটি মার্কিন ডলার অবৈধভাবে আত্মসাৎ করা হয়েছে আর ব্যক্তিগত হিসাবে তা হস্তান্তর করা হয়েছে।

২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নাজিব রাজাক ও তার জোটের ঐতিহাসিক পরাজয়ের নেপথ্যে বড় ভূমিকা রাখে ওয়ানএমবিডি আর্থিক কেলেঙ্কারি। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসেন দেশটির আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র দুই মাসের মধ্যে নাজিবের বিরুদ্ধে প্রতারণার তিনটি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি অভিযোগ আনা হয়। সব মিলে তার বিরুদ্ধে মোট ৪২টি অভিযোগ আনা হয়। এর বেশিরভাগই ওয়ানএমবিডি তহবিল সংক্রান্ত।

১৯৭৬ সালে তার প্রয়াত পিতা দেশের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী আবদুল রাজাক হোসেনের মৃত্যুর পর প্রথম পেকান আসনে ২৩ বছর বয়সে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নাজিব রাজাক জয়ী হন। দুই বছর পর তিনি উপমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৮২ ও ১৯৮৬ সালের মধ্যে পাহাং-এর মেন্টেরি বেসার হয়েছিলেন, তারপরে তিনি বেশ কয়েকটি মন্ত্রিসভা পোর্টফোলিও অধিষ্ঠিত করেছিলেন।

নাজিব রাজাক ২০০৪ সালে আবদুল্লাহ আহমাদ বাদাভির উপ-প্রধানমন্ত্রী হন এবং ২০০৯ সালে তার স্থলাভিষিক্ত হন, দেশের ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হয়ে ওঠেন। ২০১৮ সালের ৯ মে ১৪ তম সাধারণ নির্বাচনে তার বারিসান ন্যাশনাল সরকার উৎখাত হওয়ার আগ পর্যন্ত দীর্ঘ নয় বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি।

জেএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।