শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুতের দাম বাড়লো ২৬৪ শতাংশ
দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশ শ্রীলঙ্কায় এবার রেকর্ড পরিমাণে বাড়লো বিদ্যুতের দাম। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) দেশটির জনসেবা কমিশন (পিইউসিএসএল) বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে। বুধবার (১০ আগস্ট) থেকে কার্যকর হচ্ছে এ সিদ্ধান্ত।
দেশটির সরকারের এ সিদ্ধান্তে যারা ৩০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে দাম বাড়লো ১৯৮ শ্রীলঙ্কান রুপি। যারা ৬০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তাদের বাড়লো দু’শো রুপি।
গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ২ দশমিক ৫০ শ্রীলঙ্কান রুপি। দাম বাড়িয়ে তা হলো ইউনিটপ্রতি ৮ রুপি।
সিলন বিদ্যুৎ বোর্ড (সিইবি) দেখিয়েছে যে, যারা ৯০ ইউনিটের বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন তাদের ক্ষেত্রে দাম বাড়ানো হয়েছে ২৭৬ শতাংশ।
এত বেশি পরিমাণে দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কথাই জানিয়েছেন পিইউসিএসএলের চেয়ারম্যান জানাকা রথনায়েক। তিনি বলেন, গত ৯ বছরে ডলারের মূল্য বেড়েছে ১৯০ শতাংশ। তাই এই বিদ্যুতের শুল্ক সংশোধনের ফলে রপ্তানি খাতের শিল্পগুলো খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
আগামীতে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আর্থিক সম্ভাবনার অন্যতম দেশ হতে পারতো দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। কিন্তু তেমনটি না ঘটে বরং ফল হয়েছে উল্টো। দিন দিন বেড়েছে ঋণের বোঝা। ভেঙে পড়েছে দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থা। খাদ্য সংকট, বেকার সমস্যা, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের সংকট তীব্র আকার ধারণ করে গত কয়েক মাস ধরে।
এই সংকটের পেছনে রাজাপাকসে পরিবারকে দায়ী করে আন্দোলনে নামে শ্রীলঙ্কার হাজারো মানুষ। জনরোষে অবশেষে দেশত্যাগে বাধ্য হন সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। তার ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে এর আগেই পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে। এরপর দেশের হাল ধরেন কয়েকবারের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। তবে পাঁচ হাজার একশ কোটি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ শ্রীলঙ্কার সরকার গত এপ্রিলেই নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছিল। সম্ভাব্য ঋণছাড়ের জন্য এখন রনিল বিক্রমাসিংহের সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সামনে দিকে এতো দ্রুত সংকটের সমাধান দেখছেন না অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সূত্র: দ্য আইল্যান্ড ডট কে, এএফপি
এসএনআর/জেআইএম