মনিরামপুর ঋষি পল্লীতে সন্ত্রাসী হামলার পর আতঙ্ক : আটক ৩


প্রকাশিত: ০৩:২৮ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৬

উপজেলার পাড়ালা ঋষিপল্লীতে সন্ত্রাসী হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মারপিট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর সেখানকার বাসিন্দারা এখন আতঙ্কে রয়েছেন।

এদিকে রোববার সকালে এ ঘটনায় ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫ জনের নামে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। এরা হলো, পাড়ালা গ্রামের মোহাম্মদ সরদারের স্ত্রী জীবনী বেগম, মাবুবুর রহমানের ছেলে আকবর হোসেন ও সাঈদুর রহমানের ছেলে জাহিদ হোসেন।

এদিকে উত্যক্তের শিকার তিন কিশোরী সোমবার থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ভয় পাচ্ছে। আবারো হামলার আতঙ্কে পড়াশোনায়ও মনোনিবেশ করতে পারছে না তারা। তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা তাদের আশ্বস্ত করেছেন।

ঋষিপল্লীর বাসিন্দারা জানান, পাড়ালা ঋষিপল্লীর অজিত দাসের মেয়ে জয়ন্তী দাস, নিতাই দাসের মেয়ে শিল্পী দাস এবং পাড়ালা গ্রামের ইউনুচ আলীর মেয়ে রাজিয়া খাতুন সাতগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। বিভিন্ন সময় তাদেরকে উত্ত্যক্ত করতো বাহিরঘরিয়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন, পাড়ালা গ্রামের মামুন ও রিমন। ওই ছাত্রীরা বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানান। গত বুধবার স্কুল ম্যানেজিং কমিটি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু অভিযোগের বিষয়টি জানাজানি হলে শনিবার বিকেলে ইব্রাহিমের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন সন্ত্রাসী লাঠি সোটা, লোহার রড ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঋষিপল্লীতে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে তারা ঋষিপল্লীর গোবিন্দ, মুকুন্দ ও নীল পদ দাসের ঘরে ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। পরে স্থানীয় লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে। হামলায় আহত হন অন্তত ১৫ জন। হামলা, ভাঙচুরের পর ঋষিপল্লীতে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

মনিরামপুর থানা পুলিশের ওসি তাহেরুল ইসলাম জানান, হামলা ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ঋষিপল্লীর বাসিন্দা অধির কুমার দাস বাদী হয়ে আবু সাঈদ, ইব্রাহিম হোসেন, মামুন, হিরো, খলিল, জীবনী খাতুন, রফিকুল ইসলাম, রাবু, মতিন, সোহেল, আরিফুল, কবির, ইশারাত, তাজাম্মুল এবং শহীদের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ১৫ জনকে আসামি করে রোববার সকালে মনিরামপুর থানায় মামলা করেন।

এদিকে, হামলার খবরে রোববার দুপরে স্থানীয় সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য, জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, অতিরিক্তি পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক, উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু, পৌর মেয়র অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান, ইউএনও কামরুল হাসানসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত ঋষিপল্লী পরিদর্শন করেন। এসময় পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ঋষিপল্লীর বাসিন্দাদের পুরো নিরাপত্তা বিধানের আশ্বাস দিয়ে বলেন, যে কোনো মূল্যে দোষিদের গ্রেফতার করে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। পাশাপাশি তিনি ওই এলাকার ১২ এসএসসি পরীক্ষার্থী যাতে নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে সে পদক্ষেপ গ্রহণেরও নিশ্চয়তা দিয়েছেন।

মনিরামপুর থানা পুলিশের ওসি আরও তাহেরুল ইসলাম জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।

মিলন রহমান/ এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।