পাকিস্তানপ্রেমীদের ষড়যন্ত্র রুখতে হবে
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তারা বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্বাধীন একটি দেশ দিয়েছেন। আর সেই দেশে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির জন্য কঠোরভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার দুপুরে কক্সবাজার শহীদ দৌলত ময়দানে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।
তারা আরও বলেন, ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে নানান পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে তার (শেখ হাসিনার) সরকার।
দেশের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের জোয়ার উঠেছে। এভাবেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন একের পর এক সফলতায় দেশ উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন বিএনপি জামায়াত ও তাদের দোসররা নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের সময়ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন না। তাদের কাছে দেশের সাধারণ মানুষ কোনো অবস্থাতেই নিরাপদ নয়। তাই পাকিস্তানপ্রেমী এসব বিএনপি জামায়াত ও তাদের দোসরদের ষড়যন্ত্রকে কঠোরভাবে রুখতে হলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। একতাবদ্ধতা তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত করা সম্ভব হলে আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত হবে।
সম্মেলন উদ্বোধকের বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন বলেন, বিএনপি জামায়াতের পেট্রলবোমার আঘাতে অগ্নিদগ্ধ দেশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত দেশের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনেও পরিবেশের উন্নয়নসহ সর্বোপরি সফলতার সঙ্গে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তাই জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পদকটিও তিনি পেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারের সঙ্গে আমার পরিবারের ৭৫ বছরের সম্পর্ক। এ কক্সবাজারের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনজর রয়েছে। তাই দেশের সবচেয়ে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কক্সবাজারেই দিয়েছেন। যেগুলো বাস্তবায়ন হলে পাল্টে যাবে কক্সবাজারের চেহারা। শুধু মহেশখালীকে ঘিরে সরকারের যেসব উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে দেশের অন্য কোনো উপজেলায় এতসব উন্নয়ন প্রকল্প নেই। দেশের অর্থনীতির সিংহভাগ এখন কক্সবাজার থেকেই সংগ্রহ করার স্বপ্ন দেখছে সরকার। তাই তিনি ভবিষ্যতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর আস্থা রাখার জন্য তিনি অনুরোধ জানান নেতাকর্মীদের।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, এখন দেশের সবখানে উন্নয়নের জোয়ার উঠেছে। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে শেখ হাসিনার সঙ্গে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। দেশের এভাবেই উন্নয়নের দৃশ্য দেখে বিএনপি জামায়াত এখন ঈর্ষান্বিত হচ্ছে। তাই তারা যেকোনো মুহূর্তে চক্রান্ত করে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে। সেজন্য দলকে আরও আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় চার নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বেঈমানী করেননি। তাদের কর্মের শিক্ষা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সামনে এগিয়ে নিতে হবে।
দলকে শক্তিশালী করতে হলে সঠিক সময়ে সম্মেলন ও কাউন্সিল করা উচিত মন্তব্য করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, কক্সবাজারে বিগত একযুগ সম্মেলন হয়নি। নিয়মানুযায়ী সম্মেলন হলে তিন বছর অন্তর দু’জন নেতা (সভাপতি-সম্পাদক) পেতেন আওয়ামী লীগ কর্মীরা। তখন নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকতো, নেতার গুণাবলীতে দলের সুনাম বাড়তো। কিন্তু এটি হয়নি। ভবিষ্যতে সম্মেলন ও কাউন্সিল নিয়মিত করতে আগামী নেতৃত্বের প্রতি অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
অ্যাড. একে আহমদ হোসেনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে মাহবুবুল আলম হানিফ, বীর বাহাদুর এমপি, ড. হাসান মাহমুদ, হাবিবুর রহান সিরাজ, বদিউজ্জামান, কক্সবাজার সদর আসনের সাংসদ সাইমুম সরোয়ার কমল, আবদুর রহমান বদি এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, সাবেক সাংসদ অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, জেলা পরিষদ প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, সাবেক সাংসদ এথিন রাখাইন, কক্সবাজার পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমানসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বেলা তিনটার দিকে সম্মেলন শেষ করে নেতৃবৃন্দ কাউন্সিলে সভাপতি-সম্পাদক প্রার্থীদের নিয়ে সার্কিট হাউসে যান। সেখানে দলের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কক্সবাজার জেলা ও উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে জেলা আওয়ামী লীগের নতুন সভাপতি হিসেবে অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করেন।
এর আগে সম্মেলনে যোগ দিতে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা সকালে বিমানযোগে কক্সবাজার পৌঁছান। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে তাদের বিমানবন্দরে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
সায়ীদ আলমগীর/এমজেড/পিআর