বিশ্বের দুই শীর্ষ ধনীর মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণ কে এই নারী?
চলতি সপ্তাহে হঠাৎ করেই আলোচনায় উঠে এসেছেন সিলিকন ভ্যালির উদ্যোক্তা ও সমাজসেবক নিকোল শানাহান। কারণটা অবশ্য সুখকর নয়। বিশ্বের দুই শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক ও সের্গেই ব্রিনের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণ হিসেবে উচ্চারিত হচ্ছে তার নাম।
বছর তিনেক আগে গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ব্রিনকে বিয়ে করেছিলেন শানাহান। কিন্তু গত জুনে ‘অমীমাংসাযোগ্য মতপার্থক্যের’ কারণে বিচ্ছেদের আবেদন করেন তারা।
এ সপ্তাহে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল দাবি করেছে, টেসলা প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন শানাহান। এ কারণেই ব্রিনের সঙ্গে বিচ্ছেদ। বিষয়টি নিয়ে দুই ধনকুবেরের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইলন মাস্ক।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুসারে, বর্তমানে বিশ্বে ধনীদের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছেন মাস্ক। তার সম্পত্তির মূল্য ২৪ হাজার ২০০ কোটি ডলার। আর ৯ হাজার ৪৬০ কোটি ডলারের মালিক ব্রিন রয়েছেন তালিকার আট নম্বরে।
সম্প্রতি শানাহান ও ব্রিন একটি বিবাহপূর্ব চুক্তিতে সই করেছেন। বর্তমানে তাদের বিবাহবিচ্ছেদের শর্তগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। বিচ্ছেদের জন্য ১০০ কোটি মার্কিন ডলার চেয়েছেন শানাহান। এটি হলে ব্রিন-শানাহানের ঘটনাটি হবে বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল বিবাহবিচ্ছেদ।
কে এই শানাহান?
ব্লুমবার্গের খবর অনুসারে, এক চীনা অভিবাসীর সন্তান নিকোল শানাহান পেশায় আইনজীবী। কোডেক্স স্ট্যানফোর্ড সেন্টার ফর লিগ্যাল ইনফরমেটিক্সের রিসার্চ ফেলো তিনি। মেধা সম্পদের অধিকার বিষয়ে আইনি সহায়তা দেওয়া প্রতিষ্ঠান ক্লিয়ারঅ্যাক্সেসআইপি’র প্রতিষ্ঠাতা এ নারী। ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটি কিনে নেয় প্রতিদ্বন্দ্বী আইপিউই।
শানাহান জানিয়েছেন, তারা মা একটি বাসায় কাজ করতেন এবং সরকারের আর্থিক সহায়তায় জীবিকানির্বাহ করতেন।
শানাহানের লিংকইন প্রোফাইল থেকে জানা যায়, তিনি ওয়াশিংটনের পুগেট সাউন্ড ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক পাস করেন। সেখানে তিনি অর্থনীতি, এশিয়ান স্টাডিজ ও ম্যান্ডারিন চাইনিজ নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। এছাড়া সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটি থেকে আইনের ডিগ্রি অর্জন করেন এবং সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্ট হিসেবেও পড়াশোনা করেন।
২০১৯ সালে বিয়া-ইকো নামে একটি ফাউন্ডেশন চালু করেন শানাহান এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রজননে সহায়তার জন্য ১০ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বামপন্থি সংগঠন ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির সমর্থক।
চলতি মাসে এক সাক্ষাৎকারে শানাহান বলেছিলেন, আমার জীবনের কাজকে সামাজিক ন্যায়বিচার, জলবায়ু সমাধান ও একটি চিন্তাশীল, যত্নবান গণতন্ত্রের জন্য উৎসর্গ করতে আমি আগের মতোই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিচ্ছেদের পর এই ভূমিকায় আমি কীভাবে এগিয়ে যাবো, সে বিষয়ে খুবই আশাবাদী।
কেএএ/এএসএম