সুদানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দুটি গ্রুপের সংঘর্ষ, নিহত ৩৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৫৭ এএম, ১৭ জুলাই ২০২২

সুদানের দক্ষিণ-পূর্ব ব্লু নাইল রাজ্যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দুটি গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০৮ জন। শনিবার (১৬ জুলাই) সহিংসতার জেরে ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন কয়েক ডজন পরিবার। দেশটির কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বার্তি ও হাওসা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষ শুরু হয়। গত সোমবার সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে হতাহতের ঘটনা ঘটে। ১৬টি দোকানেও আগুন দেওয়া হয়।

আল-রোজারেস শহরের স্থানীয় কর্মকর্তা আদেল আগর শনিবার এএফপিকে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের আরও সৈন্য প্রয়োজন’।

তার মতে, সহিংসতার কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটে। অনেক লোক থানায় আশ্রয় নিয়েছিল। তিনি বলেন, সহিংসতা হ্রাস করার জন্য জরুরিভিত্তিতে মধ্যস্থতাকারীদের প্রয়োজন।

অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন রয়েছে ওই এলাকায় এবং রাতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। ব্লু নাইলের গভর্নর আহমেদ আল-ওমদা শুক্রবার একটি আদেশ জারি করেছেন যাতে এক মাসের জন্য কোনো জমায়েত বা মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাওসা’র এক সদস্য এএফপিকে বলেছেন, ‘ভূমির দ্বন্দ্ব মেটাতে ‘একটি বেসামরিক কর্তৃপক্ষ’ গঠনের জন্য বার্টি, হাওসার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে। এরপরই সহিংসতা শুরু হয়। কিন্তু বার্তির এক সদস্য জানান, হাওসা জনগোষ্ঠী জমি দখল করতে গেলে তারা প্রতিরোধের চেষ্টা করে।

কিসান অঞ্চল ও ব্লু নাইল রাজ্যে সাধারণত দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সুদানের সাবেক শক্তিশালী প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির ২০১৯ সালে সেনাবাহিনী দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত হন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে গত বছরের অভ্যুত্থান একটি নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি করেছে যা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে সহিংসতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। সুদান এমন একটি দেশ যেখানে ভূমি, পশুসম্পদ, পানির প্রবেশাধিকার এবং গোচারণ নিয়েও প্রায়ই সংঘর্ষ হয়।

সুদানে প্রায় ৫৯৭টি জাতির বসবাস। তারা প্রায় ৪০০ ভিন্ন ভাষায় কথা বলে। প্রধান জাতিগোষ্ঠী হচ্ছে আরবীয়। তাদের প্রায় সবাই মুসলমান। উত্তরাঞ্চলে তাদের বসবাস। কালো সুদানিদের বেশির ভাগই খ্রিষ্টান। তারা সাধারণত দক্ষিণাঞ্চলে বসবাস করে। এ দুটি প্রধান জাতি আবার ছোট ছোট কয়েকশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠতে বিভক্ত।

এছাড়া সুদানে রয়েছে মরোক্কান, আলজেরিয়ান, আরবভাষী, নুবিয়ান, মিসরীয় ইত্যাদি জাতিগোষ্ঠীর লোক। সুদানি আরবদের বেশির ভাগই ভাষাভাষী আরব, জাতিগত নয়। এ অঞ্চলের আদি অধিবাসী হচ্ছে নুবিয়ানরা। তাদের ইতিহাস আবার মিসরীয়দের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি

এসএনআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।