আমাজন নিধনের নতুন রেকর্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:১৫ পিএম, ০২ জুলাই ২০২২
ফাইল ছবি

দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদীবিধৌত অঞ্চলে অবস্থিত বিশাল বনভূমি হলো আমাজন। ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে আমাজনের বনভূমি ধ্বংসের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (১ জুলাই) ব্রাজিলের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চ (আইএনপিই) জানিয়েছে এ তথ্য।

বিশ্বের বৃহত্তম গ্রীষ্মমন্ডলীয় রেইনফরেস্টটির বছরের শুরু থেকে ৩ হাজার ৭৫০ বর্গ কিলোমিটার (১৪৫০ বর্গ মাইল) বন উজাড় হয়েছে। ২০১৬ সালে আইএনপিই বন উজাড়ের তথ্য নথিভুক্ত করা শুরুর পর থেকে বনভূমি নিধনের সর্বোচ্চ রেকর্ড এটি। গত বছর বন নিধনের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬০৫ বর্গ কিলোমিটার।

নতুন পরিসংখ্যানে জুনের শেষ ছয় দিনও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বনের দাবানলের জন্য ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখা গেছে চলতি বছর জুনে। মাসিক রেকর্ডগুলোর তথ্য-উপাত্ত বলছে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলেও বেশি পরিমাণে বন নিধন হয়েছে। যেখানে সাধারণত এসব মাসে বন উজাড় কম হওয়ার কথা।

jagonews24

আইএনপিই-র স্যাটেলাইটের ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, ২ হাজার ৫০০টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে গত মাসে। এর আগে ২০০৭ সালের জুনে ৩ হাজার ৫০০টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছিল। ২০২১ সালের জুনে সেটি ১১ শতাংশ বেড়ে গেছে। এবছরের শুরুতে ৭ হাজার ৫০০টি দাবানলের ঘটনা রেকর্ড করা হয়। ২০১০ সালের পর যেটি বেড়ে গেছে এবং ২০২১ সালে ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

গ্রিনপিস ব্রাজিলের ক্রিস্টিয়ান ম্যাজেত্তি বলেছেন, ‘শুষ্ক মৌসুম সবেমাত্র আমাজনে শুরু হয়েছে এবং ইরই মধ্যে আমরা পরিবেশ ধ্বংসের রেকর্ড দেখছি।’

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, বলসোনারোর আমলেই খনন কাজ আর কৃষি জমি তৈরির জন্য বননিধন বৃদ্ধি পেয়েছে। পলিসি বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।

উদাসীনতার কারণে আরও ক্ষতি হবে বলে উল্লেখ করেছেন ব্রাজিলিয়ান ওয়ার্ল্ড ওয়াল্ডলাইফ ফান্ডের মারিয়ানা নেপোলিতানো। তবে তিনি স্থানীয়দের স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য ক্ষতির বিষয়টি নিয়ে কিছু বলেননি।

jagonews24

সমালোচকরা বলছেন, বলসোনারো সুরক্ষিত এলাকায় খনি ও কৃষিকাজকে উৎসাহিত করেছেন। অবৈধভাবে বন উজাড়ের সঙ্গে জড়িত কৃষক, পাচারকারীসহ সংশ্লিষ্টদের দায়মুক্তি সমর্থন করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ক্লাইমেট অবজারভেটরি এনজিও-র তথ্য বলছে, গত বছর প্রধান সরকারি পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা তার নজরদারি বাজেটের মাত্র ৪১ শতাংশ ব্যয় করেছে বন সুরক্ষায়।

২০১৯ সালে জেইর বলসোনারো ক্ষমতায় বসার পর আমাজনের ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার খোয়া গেছে এক বছরেই, যার আয়তন প্রায় লেবাননের সমান। গত দশকে এটা ছিল ৬ হাজার পাঁচশ বর্গকিলোমিটার।

৭০ লাখ বর্গকিলোমিটার অববাহিকা পরিবেষ্টিত এই অরণ্যের প্রায় ৫৫ লাখ বর্গ কিলোমিটার মূলত আর্দ্র জলবায়ু দ্বারা প্রভাবিত। ৯টি দেশজুড়ে এই অরণ্য বিস্তৃত। আমাজনের ৬০ শতাংশ রয়েছে ব্রাজিলে, ১৩ শতাংশ পেরুতে এবং বাকি অংশ রয়েছে কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, গায়ানা, সুরিনাম ও ফরাসি গায়ানায়। পৃথিবীজুড়ে যে রেইনফরেস্ট তার অর্ধেকই আমাজনে।

সূত্র: ফ্রান্স২৪ ডট কম

এসএনআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।