খালি চোখেই দৃশ্যমান ‘বিশাল’ ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের অগভীর জলাভূমিতে এমন এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যা খালি চোখেই দেখা যায়। শুধু দেখা যায় বললে এর ‘বিশালাকার’ সম্পর্কে ধারণা করা কঠিন। বিজ্ঞানীদের মতে, অন্য ব্যাকটেরিয়াদের সামনে নতুন প্রজাতিটি আমাদের সামনে মাউন্ট এভারেস্টের সমান উচ্চতার কোনো মানুষ হাজির হওয়ার মতো। এ কারণেই নতুন ব্যাকটেরিয়াটিকে ‘ব্যাকটেরিয়াদের এভারেস্ট’ বলে ডাকা হচ্ছে।
স্কাই নিউজের খবর অনুসারে, থিওমার্গারিটা ম্যাগনিফিকা নামে নতুন ব্যাকটেরিয়াটি পাওয়া গেছে ক্যারিবীয় অঞ্চলের অগভীর ম্যানগ্রোভ জলাভূমিতে। এককোষী প্রাণীটির দৈর্ঘ্য প্রায় দুই সেন্টিমিটার এবং এর শরীর ছোট ঝিল্লি দিয়ে আবৃত। ফলে ব্যাকটেরিয়ার জন্য ঠিক কী কী সম্ভব, তা নতুন করে সংজ্ঞায়িত করছেন বিজ্ঞানীরা।
সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী জিন-মেরি ভল্যান্ড বলেন, এর আকার নিয়মিত ব্যাকটেরিয়ার চেয়ে হাজার গুণ বড়। এই ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার মাউন্ট এভারেস্টের মতো লম্বা মানুষের মুখোমুখি হওয়ার মতো ব্যাপার।
ক্যারিবীয় জলাভূমিতে পাওয়া গেছে নতুন ব্যাকটেরিয়াটি। ছবি সংগৃহীত
জানা যায়, ইউনিভার্সিটি ডেস অ্যান্টিলেসের মাইক্রোবায়োলজিস্ট এবং গবেষক অলিভিয়ার গ্রোস গুয়াদেলুপে নামে একটি ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের বেশ কয়েকটি এলাকায় সালফার-সমৃদ্ধ সামুদ্রিক পানিতে বিশালাকার ব্যাকটেরিয়াগুলো খুঁজে পান।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আমি একটি ম্যানগ্রোভ গাছের ডুবে যাওয়া পাতার সঙ্গে লম্বা সাদা তন্তু লেগে থাকতে দেখি। আমার কাছে তন্তুগুলো কৌতূহলোদ্দীপক মনে হওয়ায় সেগুলো বিশ্লেষণের জন্য ল্যাবে নিয়ে আসি।
এ গবেষকের কথায়, গুয়াদেলুপের ম্যানগ্রোভ জলাভূমিতে এত বড় ব্যাকটেরিয়া পাওয়া আমার জন্য খুবই আশ্চর্যজনক ঘটনা ছিল।
১০ সেন্ট ধাতব কয়েনের পাশে থিওমার্গারিটা ম্যাগনিফিকা। ছবি সংগৃহীত
একটি গড়পরতা ব্যাকটেরিয়ার দৈর্ঘ্য এক থেকে পাঁচ মাইক্রোমিটারের মধ্যে (০.০০১ মিলিমিটার) হয়। কিন্তু এই প্রজাতিটি ১০ হাজার মাইক্রোমিটারের (এক ইঞ্চির চার-দশমাংশ বা এক সেন্টিমিটার), কয়েকটি তার চেয়েও দ্বিগুণ লম্বা।
এতদিন পর্যন্ত পরিচিত সবচেয়ে বড় ব্যাকটেরিয়ার দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৭৫০ মাইক্রোমিটার।
ভল্যান্ডের মতে, নতুন ব্যাকটেরিয়া দেখিয়ে দিয়েছে, পৃথিবীতে কিছু কিছু প্রাণ এখনো কীভাবে আবিষ্কারের অপেক্ষায় রয়েছে। জীবন আকর্ষণীয়, খুব বৈচিত্র্যময় এবং জটিল। তাই কৌতূহলী থাকা ও মন খোলা রাখা জরুরি।
কেএএ/এএসএম