৩ মাস ধরে বন্ধ চিত্রা সেতুর কাজ
নড়াইলে চিত্রা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। মূল সেতুর কাজের অনুমতি না পাওয়া এবং নড়াইল অংশের ভায়াডাক্ট (ওভারপাস) এর কাজের নকশার পরিবর্তন হওয়ায় এ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করেছে, এলজিইডি বিভাগের সিদ্ধান্তহীনতা এবং গাফিলতির কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে। এদিকে তিন মাস কাজ বন্ধ হওয়ায় সেতু নির্মাণ নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, শহরের কোল ঘেঁষা নড়াইল ফেরিঘাট ও সীমাখালি অংশে এলজিইডি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে পাঁচ স্প্যান বিশিষ্ট ১৪০মিটার পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ব্রিজ নির্মাণের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমবিইএল-ইউডিসি জেভি। মূল সেতুর কাজ ঠিক মতই চললেও গত বছরের ১৫ অক্টোবর থেকে এলজিইডি বিভাগ সেতুর কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
কারণ হিসেবে জানা গেছে, মূল সেতুর ফাইলান লোড টেস্ট তিন বার করা হয়েছে এবং নিয়ম অনুযায়ী এর ফলাফল ঠিকঠাক থাকলেও এলজিইডি বিভাগ এখনও মূল সেতু নির্মাণ কাজের অনুমতি দেয়নি।
এদিকে কণ্ট্রাক্ট নকশা অনুযায়ী নড়াইল অংশের ভায়াডাক্ট (ওভারপাস) এর কাজ চলতে থাকলেও এ অংশের নকশা পরিবর্তন হয়েছে। নতুন নকশা এখনও পাস না হওয়ায় ২৯ নভেম্বর থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগ স্লোপের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সেতুর ৫০ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৩৩ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এ বছরের অক্টোবর মাসে সেতুর কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা।
এ ঠিকাদারী কাজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী মো. কালাম হোসাইন অভিযোগ করে বলেন, মূল ব্রিজের কাজের অনুমতি এখনও পাওয়া যায় নি। এছাড়া নড়াইল অংশে ভায়াডাক্ট (ওভারপাস) কাজের নকশা পরিবর্তন হওয়ায় এলজিইডি বিভাগ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। নড়াইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৗশলীর বক্তব্য সঠিক নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোতালেব বিশ্বাস বলেন, ঠিকাদার নির্দিষ্ট সময়ে কাজ করতে পারবে না বলে এখন তালবাহানা করছে। মূল সেতুর কাজের অনুমতি দেয়া হয়েছে। কাজ করতে কোনো বাঁধা নেই।
এলজিইডি ঢাকা হেডকোয়ার্টারের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলিনুর রহমান জানান, নড়াইল অংশের ভায়াডাক্ট (ওভারপাস) এর নকশার কাজ চলছে। আশা করা হচ্ছে খুব শিগগিরই নকশার কাজ শেষ হবে।
এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রকৌশলী তারেক আজিজ বলেন, এ বছরের অক্টোবর মাসে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এলজিইডি বিভাগের লিখিত অনুমতি না পাওয়ায় কাজ করা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ব্রিজটি নির্মিত হলে নড়াইল সদরের সঙ্গে লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলা, মাগুরা, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার সরাসরি যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। নড়াইলবাসী দীর্ঘদিন ধরে এ ব্রিজের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছিল।
হাফিজুল নিলু/এসএস/পিআর