দোকান বরাদ্দ পেলেন ফুটপাতের অন্ধ ব্যবসায়ী
একটি জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশের পর সরকারি সহযোগিতায় পিরোজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে একটি দোকান ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন ফুটপাতের অন্ধ ব্যবসায়ী পঙ্কজ কুমার বিক্রম। সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসক একেএম শামিমুল হক সিদ্দিকী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পঙ্কজের কাছে দোকান ঘরটি হস্তান্তর করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মানিকহার রহমান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কামরুজ্জামান, সম্মিলিত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আতাউর রহমান শেখ আলমসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এছাড়া পঙ্কজের মা রেনু বালা বিক্রম, স্ত্রী অনিতা বিক্রম, দুই সন্তান নিশা বিক্রম ও প্রদীপ বিক্রম এবং শ্বশুর দ্বিজবর হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।
সরকারিভাবে দোকান ঘরটি পাওয়ার পর আনন্দে পঙ্কজের চোখ থেকে পানি বেরিয়ে আসে। এ সময় তিনি সরকার, জেলা প্রাশাসক ও পত্রিকার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং এই সংগঠনগুলোকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁনোর আহবান জানান।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, পিরোজপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান মালেক, ব্যবসায়ী নেতা আতাউর রহমান শেখ আলম ও সংবাদপত্রের সহযোগিতায় তিনি অসহায় এই মানুষটির পাশে দাঁড়াতে পেরেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায় ‘ব্লাইন্ড ম্যান রানস সাকসেসফুল বিজনেস‘ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর পঙ্কজের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রিপরিষদের একজন উপসচিব পিরোজপুরের জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান।
এরই ফলশ্রুতিতে জেলা প্রশাসক শহরের প্রাণকেন্দ্র দামোদর ব্রিজের পাশে ৫৪ বর্গফুট জায়গার উপর পঙ্কজের জন্য সম্পূর্ণ সরকারি খরচে একটি দোকান ঘর নির্মাণ করে দেন। এখন থেকে পঙ্কজ ওই দোকান ও জমির মালিক। তবে প্রতি বছর তাকে ওই জমি নবায়ন করতে হবে।
মাত্র সাত বছর বয়সে চোখের দৃষ্টি শক্তি হারালেও, কখনও ভিক্ষার ঝুঁলি কাধে তুলে নেননি পঙ্কজ। বরং নিজেকে অসহায় না ভেবে, তিনি বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার মাধ্যমে নিজে জীবিকা অর্জনের চেষ্টা করেছেন।
সর্বশেষ তিনি দামোদর ব্রিজের উপর ডিম, মুড়ির মোয়া ও নানা ধরনের পণ্য বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। দোকান ঘরটি পাওয়ার ফলে পঙ্কজের একটি সুন্দর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হলো।
পঙ্কজের দ্বারা অনেক শারীরিক প্রতিবন্ধী অনুপ্রাণিত হবেন বলে আশা করেন পিরোজপুরের সাধারণ মানুষ।
হাসান মামুন/বিএ