মন্ত্রিত্বের পর পার্লামেন্টও ছাড়লেন বাসিল রাজাপাকসে
লঙ্কান পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের ভাই ও দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসে। শ্রীলঙ্কায় চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সরকারি সবধরনের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। খবর রয়টার্সের।
এদিন বাসিল রাজাপাকসে সাংবাদিকদের বলেন, আজ থেকে আমি সরকারের কোনো কাজকর্মে জড়িত থাকবো না। তবে আমি রাজনীতি ছাড়বো না, ছাড়তে পারি না।
বলা হয়, রাজাপাকসে পরিবারের রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ করেন বাসিল রাজাপাকসে। গত এপ্রিল মাসের শুরুতে পদত্যাগ করার আগপর্যন্ত শ্রীলঙ্কার অর্থমন্ত্রী ছিলেন তিনি। লঙ্কান সরকারের অসময়োচিত কর হ্রাসের সিদ্ধান্তে তিনি মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন বলে শোনা যায়। এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশটির রাজস্ব আয় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কমে যায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, যার ফলে সংকট আরও তীব্রতর হয়।
এর আগে, স্বাধীনতা-উত্তর শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহতম অর্থনৈতিক সংকটের জেরে ব্যাপক বিক্ষোভ-সহিংসতার মধ্যে গত মে মাসে পদত্যাগ করেন গোতাবায়ার বড় ভাই ও লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। তবে তিনি এখনো লঙ্কান পার্লামেন্টের সদস্য।
২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত টানা ১০ বছর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ছিলেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। ২০০৪ থেকে ২০০৫, ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এবং সবশেষ ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে। এছাড়া ২০০২ থেকে ২০০৪ ও ২০১৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিরোধী দলীয় নেতা এবং ২০০৫ থেকে ২০১৫ ও ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার অর্থমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন মাহিন্দা।
তবে শেষটা মোটেও সুখকর হয়নি অভিজ্ঞ এ রাজনীতিকের। শ্রীলঙ্কার জনগণের কাছে গৃহযুদ্ধ জয়ের নায়ক থেকে হঠাৎই ভিলেন বনে গেছেন তিনি।
দক্ষিণ এশীয় দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ইতিহাসের ভয়াবহতম অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলায় মদত দেওয়ার অভিযোগের মুখে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। তারা দেশত্যাগে জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। মাহিন্দাকে গ্রেফতারের দাবিতে এখনো অনড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা।
কিন্তু ক্ষমতা কখন ছাড়তে হয় তা যদি আগে জানতেন, তাহলে হয়তো শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে এমন অবস্থায় পড়তে হতো না বলে মন্তব্য করেছেন মাহিন্দারই আপন বড় ভাই চামাল রাজাপাকসে। শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন দল এসএলপিপির এমপি এবং সাবেক স্পিকার চামাল সম্প্রতি লঙ্কান পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছেন, মাহিন্দার উচিত ছিল প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ করার পরপরই রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া।
কেএএ/জিকেএস