বেশি দামে বিক্রির আশায় গম মজুত করছে পাঞ্জাবের কৃষকরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৫৪ পিএম, ২০ মে ২০২২
ফাইল ছবি

ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে চলতি মৌসুমে যে পরিমাণ গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল স্থানীয় সরকার, তার চেয়ে ১২ থেকে ১৩ লাখ টন কম পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পরে বেশি দামে বিক্রির আশায় এসব গম মজুত করেছেন কৃষকরা। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

পাঞ্জাবের খাদ্য ও সরবরাহ সচিব গুরকিরাত কিরপাল সিং বলেছেন, চলতি রবি মৌসুমে রাষ্ট্রীয় সংস্থা, ফুড করপোরেশন অব ইন্ডিয়া (এফসিআই) এবং বেসরকারি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে গম সংগ্রহের ক্ষেত্রে ১২ থেকে ১৩ লাখ টনের ব্যবধান রয়েছে।

বলা হচ্ছে, এর কিছু অংশ সরাসরি কৃষকদের থেকে কিনে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি রাজ্যের খাদ্য সচিব।

তিনি আশা করছেন, কৃষকরা শিগগির তাদের ফসল বিক্রি করে দেবেন। তা নাহলে সরকারের সংগ্রহ কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে বা পরে দাম কমে গেলে তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।

স্থানীয় কমিশন এজেন্টরা জানিয়েছেন, যেসব কৃষকের বিকল্প আয়ের উৎস রয়েছে, এবারের মৌসুমে তাদের অনেকেই সরকারি সংস্থাগুলোর কাছে গম বিক্রি করেননি।

এ ধরনের এজেন্টদের একটি সংগঠনের প্রধান রবিন্দর সিং চিমা বলেন, যেসব কৃষকের সামর্থ্য রয়েছে, তারা তাদের উৎপাদিত শস্য আটকে রেখেছেন, পরে দাম বাড়লে বিক্রি করবেন বলে। আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত ১০ কৃষকের মধ্যে গড়ে নয়জন তাদের ফসল নিয়ে এসেছেন, বাকিরা আটকে রেখেছেন। আমাদের ধারণা, এর পরিমাণ পাঁচ থেকে ১০ লাখ টন হতে পারে।

কৃষকদের মজুত করা গম বিক্রির সুযোগ দিতে রাজ্যের খাদ্য বিভাগ শস্য সংগ্রহের সময়সীমা আগামী ৩১ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এর আগে ১৩ মে’র মধ্যে এই কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা ছিল।

অবশ্য গমের ভালো দাম পাওয়া নিয়ে এখনো শঙ্কা রয়েছে স্থানীয় কৃষকদের। রবিন্দর সিং চিমার ভাষ্যমতে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নির্ধারিত প্রতি কুইন্টাল (১০০ কেজি) গমের সর্বনিম্ন মূল্য (এমএসপি) ২ হাজার ১৫ রুপি। বেসরকারি ব্যবসায়ীরা আগে প্রতি কুইন্টাল গমের দাম ২ হাজার ৩০০ রুপি পর্যন্ত দিতে রাজি ছিলেন। কিন্তু রপ্তানি নিষিদ্ধ হওয়ার পর তারা এমএসপির চেয়ে মাত্র ২০ থেকে ৩০ রুপি বেশি দিতে চাচ্ছেন।

বেশি দামে বিক্রির আশায় গম মজুত করছে পাঞ্জাবের কৃষকরাভারতের অন্যতম প্রধান গম উৎপাদনকারী রাজ্য পাঞ্জাব। ফাইল ছবি

দেশীয় বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণের কথা বলে গত ১৩ মে গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করে ভারত। তবে প্রতিবেশী ও খাদ্য সংকটের ঝুঁকিতে থাকা কিছু দেশকে এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। এর বাইরে, অন্যান্য দেশের সরকারের অনুরোধ সাপেক্ষেও গম রপ্তানির সুযোগ রেখেছে নয়াদিল্লি।

ভারতের এ নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশে গমের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে ১৫ মে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন নিশ্চিত করেছে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ভারতের গম রপ্তানি বন্ধ হচ্ছে না।

এর দুদিন পরেই অবশ্য গম রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করেছে ভারত। গত ১৭ মে ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, গমের যেসব চালান পরীক্ষার জন্য কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং ১৩ মে বা এর আগে তাদের কাছে নিবন্ধিত হয়েছে, এ ধরনের চালানগুলো রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে।

কেএএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।