এরদোয়ানের আপত্তিতে ফিনল্যান্ড-সুইডেনের ন্যাটোয় ঢোকা অনিশ্চিত
ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদানের খবরে আপত্তি জানিয়েছে তুরস্ক। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, নর্ডিক দেশ দুটিকে পশ্চিমা সামরিক জোটে অন্তর্ভুক্ত করায় তাদের ‘ইতিবাচক মতামত’ নেই। এর ফলে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যটোয় যোগদান অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কারণ, জোটে ঢুকতে হলে এর ৩০ সদস্যেরই সম্মতি প্রয়োজন তাদের। খবর এএফপির।
শুক্রবার (১৩ মে) জুমার নামাজের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান অভিযোগ করেছেন, ফিনল্যান্ড-সুইডেন উভয়ই ‘সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর’ পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
দেশ দুটিকে ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্ত করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের ইতিবাচক মতামত নেই। কারণ, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো সন্ত্রাসী সংগঠনের গেস্টহাউজের মতো।
তুরস্ক দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, উত্তর ইউরোপীয় দেশগুলো, বিশেষ করে সুইডেন কুর্দি সংগঠন এবং ২০১৬ সালে ব্যর্থ অভ্যুত্থানে জড়িত অভিযুক্ত ফেতুল্লাহ গুলেনকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
এদিন ১৯৫২ সালে গ্রিসের ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্তিতে তুরস্কের সাবেক শাসকদের সম্মতি দেওয়া ‘ভুল’ ছিল বলেও মন্তব্য করেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, আমরা এই ইস্যুতে দ্বিতীয়বার ভুল করবো না।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ শুরুর পর থেকে প্রতিবেশী ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে। উভয় দেশই যত দ্রুত সম্ভব পশ্চিমা এ সামরিক জোটের সদস্য হতে চায়।
ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গও জানিয়েছেন, তারা দুহাত খুলে নর্ডিক দেশ দুটিকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। তবে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে তুরস্কই প্রথম এ বিষয়ে আপত্তি জানালো।
শুক্রবার এরদোয়ানের এমন মন্তব্যের পর সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জানিয়েছেন, শনিবার ন্যটোর অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বার্লিনে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের কথা হবে বলে আশা করছেন।
সুইডিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান লিন্ডে বলেছেন, তুর্কি সরকার আমাদের কাছে সরাসরি এ ধরনের কোনো বার্তা দেয়নি। ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেক্কা হাভিস্তোও বলেছেন, তিনি আলোচনা এগিয়ে নিতে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুর সঙ্গে সাক্ষাতের আশা করছেন।
নিয়ম অনুসারে, কোনো দেশ ন্যাটো সদস্য হতে আবেদনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ৩০ সদস্যের এই জোট থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে তার জন্য প্রত্যেক সদস্যের সম্মতির প্রয়োজন হয়। এরপর শুরু হয় সদস্যপদের জন্য সমঝোতা।
তুরস্ক বা অন্য কোনো সদস্য আপত্তি না জানালে ফিনল্যান্ড-সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদানের চূড়ান্ত অনুমোদন হতে পারে আগামী জুনে অনুষ্ঠিতব্য মাদ্রিদ সম্মেলনে। তবে কোনো সদস্য আপত্তি করলে বা সমঝোতা না হলে নর্ডিকদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যেতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি
কেএএ/এএসএম