গণমাধ্যম বিচার বিভাগকে সহযোগিতা করে


প্রকাশিত: ০৪:২৩ এএম, ২০ জানুয়ারি ২০১৬

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে বলেছেন, বিচার বিভাগ আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে। গণমাধ্যম সেই বার্তা বৃহত্তর জনগোষ্ঠির দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। তাই গণমাধ্যম তার দায়বদ্ধতা থেকে বিচার বিভাগ ও বিচারপ্রার্থী জনগণের আশা আকাঙ্খা ও উদ্দেশ্য ইত্যাদি সংবাদ প্রকাশ করে সকলকে সচেতন করার গুরুদায়িত্ব পালন করে আসছে।

বাংলাদেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তিতে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বানীতে তিনি এ কথা বলেন।

বিচার বিভাগের সংস্কারে কাজ করার জন্য আগামী দিনের পথ চলায় সংশ্লিষ্ট সকলের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা। মঙ্গলবার রাতে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এই বানী প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে এক বছর পূর্ণ করেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি বানীতে সবাইকে পারস্পারিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বিচার অঙ্গণের গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার, বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী জনগণ তথা দেশবাসীর পূর্ণ সহযোগিতা পেলে বিদ্যামন মামলাজট দ্রুত নিরসন সম্ভব হবে। স্বল্প খরচে স্বল্প সময়ে গুনগত বিচার পাওয়া সম্ভব হবে এবং এ দেশের বিচার ব্যবস্থা বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

বানীতে তিনি আইন মন্ত্রী, আইনজীবী ও বিচার অঙ্গণের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শুভেচ্ছা জানান। গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে এক বছরের দায়িত্ব পালন বিষয়ে উৎসাহ ব্যঞ্জক সংবাদ প্রকাশ করেছে। প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞতা জানানো সম্ভব নয় ও বিচারক হিসেবে কথা বলার পরিসরও সীমিত বিধায় তিনি বানীর মাধ্যমে সকলের প্রতি কৃতঙ্গতা প্রকাশ করেছেন।

প্রধান বিচারপতি গত এক বছরে মামলা জট নিরসনে গ্রহীত পদক্ষেপ, বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশন, মামলা ব্যবস্থাপনা, আদালত সংস্কার, বিচারকদের প্রশিক্ষণ, মামলা নিষ্পত্তির হার, দেশের আদালতগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিভিন্ন আদালত পরিদর্শনের তথ্য বানীতে তুলে ধরেন।

বানীতে প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের মামলাজট নিরসনকল্পে বিদ্যমান অবকাশকালীন ছুটি কমিয়ে আনা ও যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তিকৃত মামলার রায় লেখা নিশ্চিত করার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করা স্বত্ত্বেও সহকর্মী সকল বিচারপতিগণকে এ বিষয়ে সম্মত করতে সমর্থ হইনি এটা আমার ব্যর্থতা। কোনো কোনো বিচারক রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন, আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী।

বানীতে তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ বাংলাদেশের সংবিধান, আইনের রক্ষক, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ গ্রহণ করেন। কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না। আদালতের নথি সরকারি দলিল। একজন বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর আদালতের নথি নিজের নিকট সংরক্ষণ, পর্যালোচনা বা রায় প্রস্তুত করা এবং তাতে দস্তখত করার অধিকার হারান। আশা করি বিচারকগণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এমন বে-আইনি কাজ থেকে বিরত থাকবেন।

বিগত এক বছর গণমাধ্যম বিচার বিভাগের বিভিন্ন কার্যক্রমের সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করায় তাদের অবদান বিশেষভাবে স্মরণ করেন প্রধান বিচারপতি।

এফএইচ/এআরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।