ফরিদপুরে মাস হিস্টিরিয়া রোগে আবারও ৩৭ ছাত্রী হাসপাতালে


প্রকাশিত: ০৯:৫৪ এএম, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬

সকালে বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বিলি চলাকালে একজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে যায়। এরপর একে একে বিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্রীদেরও মাথা ঘুরে পড়া, শ্বাসকষ্টসহ কাঁপুনি দিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে। এমন অবস্থা দেখে স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটিসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অসুস্থ ছাত্রীদেরকে দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। মাস হিস্টিরিয়া নামক এই রোগে মঙ্গলবার সকালে ৩৭ জন ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ফরিদপুর সদর উপজেলার শিবরামপুর আরডি একাডেমিতে মঙ্গলবার সকালে এই ঘটনাটি ঘটে। একই স্কুলে সোমবার দুপুরের পরে এভাবেই অসুস্থ হয়ে পড়ে ২১ জন ছাত্রী। পরে তাদেরকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার দুই ঘণ্টা পর থেকে সকলে সুস্থ হয়ে যায়। মাস হিস্টিরিয়া রোগে জীবনের কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণির ছাত্রীরা এই রোগে অসুস্থ হয়েছেন। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র একজন ছাত্র অসুস্থ হয়েছে বলে জানা যায়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, সকালে সোমবারের মতো একে একে ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়। পরে সবাই মিলে ছাত্রীদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যান। গতকাল যেসব ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল তারা সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গিয়েছে বলেও জানান এই শিক্ষক।

এছাড়া তিনি আরও বলেন, পরপর দুদিন স্কুলে এ ধরনের সমস্যা হওয়ায় ম্যানেজিং কমিটি ও কর্তৃপক্ষের পরামর্শে আমরা আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছি।

Faridpur

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. ইউসুফ আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমি সকল রোগীদেরকেই দেখেছি। তাদেরকে স্যালাইন, ঘুমের ওষুধসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এই রোগে জীবনের কোন ঝুঁকি নেই। তাছাড়া অল্পবয়সী মেয়ে ও দুর্বল মানসিকতার ছাত্রীদের এমন রোগ হয়ে থাকে। একই জায়গায় একজনের এমন রোগ হলে আস্তে আস্তে অন্যরাও অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা যায়।

এই ধরনের রোগকে মাস হিস্টিরিয়া বা মনোরোগ বলা হয়ে থাকে। রোগীরা সাধারণত ২/৩ ঘণ্টার মধ্যেই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে যান। তাই হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়া, মাথাব্যাথা, বমি ও কাঁপুনির মতো রোগ স্কুলে বা বেশি সংখ্যক মানুষের মধ্যে দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে মনোবল শক্ত রেখে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেই যথেষ্ট বলে পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।

এতো বেশি সংখ্যক ছাত্রী একসঙ্গে অসুস্থ হওয়ায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হৈ চৈ পড়ে যায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, একসঙ্গে অনেক ছাত্রী অসুস্থ হওয়ায় অভিভাবক ও উৎসুক লোকের ভিড় কমাতে ও হাসপাতালের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে আমরাও হাসপাতালে ছুটে যাই। এ ধরনের ঘটনায় উৎসুক জনগণই আরও সমস্যা তৈরি করে। তাই তাদেরকে শান্ত থাকার পরমর্শ দেন তিনি।

এস.এম. তরুন/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।