মেয়রের হস্তক্ষেপে ঘর পেলো সংখ্যালঘু পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৯:০৯ এএম, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬

বরগুনার আমতলীতে আমরণ অনশনে বসার পর পৌর মেয়রের হস্তক্ষেপে দোকান ঘর ফিরে পেয়েছেন এক সংখ্যালঘু পরিবার। মঙ্গলবার সকালে আমতলীর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার উপরে তারা এ অনশনে বসেন। অনশনে বসা পরিবারের প্রধানের নাম অমল চন্দ্র শীল। তিনি আমতলী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০০ সালে জেলা পরিষদের নিকট থেকে আমতলী জামে মসজিদের সামনে এক খণ্ড জমির ডিসিআর নিয়ে তাতে ঘর তুলে সেলুনের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন স্থানীয় নরসুন্দর অমল চন্দ্র শীল। আর্থিক কারণে ২০০৮ সালে স্থানীয় পত্রিকা বিক্রেতা শফিকুল হক সোহেলের কাছে ঘরটি মাসিক পাঁচ’শ টাকায় ভাড়া দেন তিনি। দীর্ঘদিন ভাড়া থাকার পর ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে গোপনে জেলা পরিষদের নিকট থেকে ঘরের জায়গা নিজ নামে ডিসিআর নিয়ে নেন শফিকুল হক সোহেল।

অমল চন্দ্র শীল জানান, আমতলী পৌরসভার সদর রোডে অল্প একটু ডিসিআরের জমিতে একটি সেলুনের ব্যবসা ছিলো তার। এ ব্যবসার আয় দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়ায় ২০০৮ সালে ’আলমগীর নিউজ এজেন্সি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে তিন বছরের চুক্তিতে তার ঘরটি ভাড়া দেন তিনি। ঘর ভাড়ার নিয়মানুসারে চুক্তিপত্রে সাক্ষী ছিলেন আমতলী উপজেলা পরিষদের তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান মো. মজিবর রহমান, সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন মৃধাসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। তিন বছর পর চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হলেও তখন ঘর ছাড়েনি আলমগীর নিউজ এজেন্সী।

অমল চন্দ্র শীল আরও জানান, তখন অনেক ঘোরাঘুরির পর স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে অমল চন্দ্র শীলের সঙ্গে পুনরায় চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয় আলমগীর নিউজ এজেন্সির মালিক মো. শফিকুল হক সোহেলের। যার মেয়াদ ছিল ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ সাল পর্যন্ত। কিন্তু এই চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ঘর ছাড়তে অস্বীকৃতি জানায় আলমগীর নিউজ এজেন্সীর সত্ত্বাধিকারী শফিকুল হক সোহেল।

Barguna-People

অমল চন্দ্র শীল জানান, শফিকুল তার ঘরে ভাড়া থাকাকালীন ওই ঘরের ডিসিয়ার পরিবর্তন করে তার নামে করে আমার সম্পত্তি বেদখল করে। তাই তিনি তার ঘর ফেরত পাওয়ার জন্য স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের দারস্থ হয়ে কোনো ফল না পেয়ে পরিবার পারিজন নিয়ে অনশনে বসেন।

এদিকে তাদরে অনশনের খবরে তাৎক্ষণিক ছুটে আসেন আমতলী পৌরসভার মেয়র মো. মতিয়ার রহমান এবং আমতলী সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন মৃধা। পরে পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমান পুরো ঘটনা শুনে আলমগীর নিউজ এজেন্সীর সত্ত্বাধিকারী শফিকুল হক সোহেলকে মেয়রের মালিকানাধীন আব্দুল্লাহ সুপার মার্কেট এর একটি কক্ষ এক বছরের জন্য বিনা ভাড়ায় থাকার জন্য বলেন এবং সন্ধ্যার মধ্যে অমলকে তার ঘর বুঝিয়ে দেয়ার  নির্দেশ দেন।

এরপর আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম দেলোয়ার, পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমান ও আমতলী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা তাদের শরবত পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান।

এ বিষয়ে আমতলী পৌরসভার মেয়র মো. মতিয়ার রহমান বলেন, আলমগীর নিউজ এজেন্সির সত্ত্বাধিকারী শফিকুল হক সোহেলকে সন্ধ্যার মধ্যে ঘর অমলকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। সন্ধ্যায়ই অমল তার ঘর বুঝে পাবেন বলেও জানান তিনি।

সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।